নড়াইল জেলা পরিষদের টাকায় হবে কালিদাস ট্যাংকের বিউটিফিকেশন , পৌরসভার প্রকল্পে নয়

নড়াইল প্রতিনিধি:বিউটিফিকেশনের নামে নড়াইল শহরের ঐতিহ্যবাহী কালিদাস ট্যাংক দখল করে কাজ করছেন পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা বলে অভিযোগ নড়াইল জেলা পরিষদের । এ অভিযোগ করেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস। এ বিষয়ে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে পুলিশ সুপারের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এছাড়াও কাজ বন্ধের জন্য উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন বলে জানাগেছে। প্রয়োজনে আদালতে মামলা করা হবে বলেও তিনি জানান। তিনি বলেন জেলা পরিষদের জমি বিউটিফিকেশন করতে
হলে জেলা পরিষদের টাকাই আমরা করব, অন্য কোন প্রতিষ্ঠান নয়।

নড়াইল জেলা পরিষদের টাকায় হবে কালিদাস ট্যাংকের বিউটিফিকেশন , পৌরসভার প্রকল্পে নয় || PIB71.TV

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সোমবার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কক্ষে গণমাধ্যম কর্মিদের কাছে তিনি এসব কথা বলেন। জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. লুৎফর রহমান, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান খোকন কুমার সাহা, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি খন্দকার শামীম, হাবিবুল্লাহ বিপ্লবসহ জেলা পরিষদের কর্মকর্তা কর্মচারিরা এসময় উপস্থিত ছিলেন। জানাগেছে, নড়াইল পৌরভবনের পেছনে নড়াইল শহরের ঐতিহ্যবাহী কালীদাস ট্যাংক নামে একটি পুকুরকে “লাল মিয়া” নাম দিয়ে বিউটি ফিকেশনের নামে নড়াইল পৌরসভা প্রায় ৬ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহন করে। গত বছরের ২২ অক্টোবর এ প্রকল্পর উদ্বোধন করেন নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা । মহিষখোলা মৌজার ৫২৮নং দাগ জমির পরিমান ২ একর ৫ শতক এটি কালিদাশ ট্যাংক পুকুর নামে পরিরিচিত। কালিদাশ ট্যাংক পুকুরটিকে “লাল মিয়া বিউটিফিকেশন” নামে একটি প্রকল্প গ্রহন করে পৌর কর্তৃপক্ষ।

 

 

 

প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যায়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার কথা। জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ সুবাস চন্দ্র বোস। গত ১২ এপ্রিল দিকে কালিদাস ট্যাংক এলাকায় তদন্ত করতে স্থানীয় সরকার বিভাগ ,নড়াইলের উপ-পরিচালক জুলিয়া সুকায়না আসলে তার সামনে পুকুরের মালিকানা নিয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ সুবাস চন্দ্র বোস ও পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা বাকবিন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জুলিয়া সুকায়না উভয় পক্ষকে তার কার্যালয়ে কাগজপত্র নিয়ে হাজির হতে বললে পরে সেখানে শুনানী অনুষ্ঠিত হয়।

 

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ সুবাস চন্দ্র বোস অভিযোগ করে বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে, আমরা উন্নয়ন চাইনা, আমরা উন্নয়নের বিপক্ষে। আমরাও উন্নয়ন চাই, আমাদের জমিতে আমাদের টাকাই,আমরা উন্নয়ন করব, বিউটিফিকেশন করতে হলে আমরা করব। পৌরমেয়র বে- আইনি ভাবে জেলা পরিষদের জায়গায় দখল করে প্রকল্পের কাজ করছেন। তিনি জেলা পরিষদের পক্ষের নথিপত্র দেখিয়ে বলেন, ১৯০৭ সালে তৎকালীন জমিদাররা তার পিতার নামে কালিদাস ট্যাংক পুকুরটি খনন করেন। পরবর্তিতে জেলা পরিষদের অধিনে হস্থান্তর করা হয়। সকল কাগজপত্র জেলা পরিষদের রয়েছে। আইনের প্রতি কোন প্রকার তোয়াক্কা না করেই পৌরমেয়র কালিদাস ট্যাকের নাম পরিবর্তন করে “লাল মিয়া বিউটিফিকেশন” নামে প্রকল্প এনে পুকুরের
খনন কাজ করছেন। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল,আমরা ইতিমধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়সহ সংশ্লিষ্ট সব জায়গায় লিখিত ভাবে জানিয়েছি । উকিল নোটিশও পাঠানো হয়েছে সরাসরি এবং ডাকযোগে। তারা তা গ্রহন করেননি।

 

 

 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অ্যাডঃ সুবাস চন্দ্র বোস কেন ছিলেন , এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তখন আমি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলাম না, আমি গিয়ে ছিলাম জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হিসাবে। এখন আমি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ সম্পত্তি জেলা পরিষদের, এটা দেখার দায়িত্ব চেয়ারম্যানের , সারাজীবন আমি চেয়ারম্যান থাকবে না, কোন প্রকানর অনিয়ম করলে আমাকেই
জবাবদিহি করতে হবে। আমরা আদালতে মামলাসহ আইনগত ভাবে এর মোকাবেলা করব জানিয়ে তিনি বলেন, জেলা পরিষদের মালিকানাধীন জমিতে কাজ করতে হলে মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে আইনগত ভাবে করতে হবে। মন্ত্রনালয় যে সিদ্ধান্ত দেবে আমরা তা মেনে নেব।

 

এ আগে সাবেক পৌর মেয়র মোঃ জাহাঙ্গির বিশ্বাস নতুন পৌর ভবন তৈরীর সময় পৌর ভবনের বারতি জমির জন্য জেলা পরিষদের কাছে লিখিত অনুমতি চেয়ে ছিলেন। তৎকালিন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ সোহরাব হোসেন বিশ্বাস একটি অনুমতি দিয়ে ছিলেন। জেলা পরিষদের জমি দেয়া ক্ষমতা কোন চেয়ারম্যানের নেই। মন্ত্রনালয়ের সিদ্ধান্ত পেলে, এ বিষয়েও আমরা ব্যাবস্থা গ্রহন করবো। জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. লুৎফর রহমান পৌর ভবনের জমি দেয়ার ব্যাপারে বিষয়ে জানান,মন্ত্রনালয়ের সিদ্ধান্ত ছাড়া জেলা পরিষদের কোন আইনে জেলা পরিষদের কোন জমি দেয়ার অধিকার চেয়ারম্যানের নেই।

 

 

নড়াইল পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আঞ্জুমান আরা অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন, এসব জমির কাগজপত্র আমাদের কাছে রয়েছে। জমি পৌরসভার দখলে রয়েছে আমরা খাজনাও দিয়েছি। আমাদের জমিতে আমরা কাজ করছি বলেও দাবি করেন পৌরমেয়র। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী জানান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের চিঠির আলোকে স্থানীয়র সরকার শাখা তদন্ত করেছে। বাস্তব চিত্র তুলে ধরে তদন্ত প্রতিবেদন সোমবার মন্ত্রনালয়ে আমরা প্রেরন করছি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় আমাদের যে
নির্দেশনা দিবেন সেভাবে আমরা পরবর্তি পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে |

Please follow and like us:

     এই বিভাগের আরো খবর

আমাদের পেজ লাইক করুন

error: Content is protected !!