সমুদ্র কার না ভালো লাগে! দেশ বিদেশে ঘুরতে গেলে প্রকৃতির কত দেখা অদেখা সৌন্দর্য চোখে পড়ে। আর আশেপাশে সমুদ্র বা সী বিচ থাকলে মনতো সেখানে টানবেই। এক গবেষনায় দেখা গেছে, যেসব দেশে সী বিচ রয়েছে, সে দেশগুলোতে পর্যটকদের সংখ্যাও তুলনামূলক বেশী।
আসুন তবে জেনে নেই বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত সম্পর্কে:
প্রায়া ডো ক্যাসিনো বীচ, ব্রাজিল (Praia do Cassino Beach, Brazil):
ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত এটি বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ২৪১ কিলোমিটার। দীর্ঘ এ সমুদ্র সৈকতটি রিও গ্রান্ডে উপকূল থেকে উরুগুয়ে সীমান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত। সৈকতের সাদা বালি ও উষ্ণ তাপমাত্রা সারা বিশ্বের পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষনীয় স্থান।
নাইনটি মাইল বীচ, অস্ট্রেলিয়া (Ninety Mile Beach, Australia):
অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়াতে অবস্থিত প্রায় ১৫১ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সমুদ্র সৈকতটি। সৈকতের অপরূপ সৌন্দর্য্য উপভোগ করার জন্য প্রতি বছর পচুর সংখ্যক পর্যটক এখানে বেড়াতে আসে। সৈকতের সৌন্দর্য ছাড়াও রয়েছে বীচে বসে ডলফিন ও তিমির দৃশ্য উপভোগ করার সুবিধা। সাতাড়ুদের কাছেও দারুণ জনপ্রিয় এ সৈকতটি।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, বাংলাদেশ (Cox’s Bazar Beach, Bangladesh):
পাহাড় আর সমুদ্রের অপূর্ব সমন্বয় দেখতে বাংলাদেশের দক্ষিণে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে প্রতি বছর পাড়ি জমায় লাখ লাখ পর্যটক। ১২০ কি.মি দীর্ঘ এ সমুদ্র সৈকতটিকে পৃথিবীর অন্যতম বালুকাময় সমুদ্র সৈকত ও বলা হয়ে থাকে। সাগরের বিশাল ঢেউ, মায়াবী গোধূলী, সূর্যোদয়ের দৃশ্য সবকিছুই যেন মন কাড়ে পর্যটকদের।
পাদ্রে আইল্যান্ডে আন্তর্জাতিক সমুদ্র সৈকত, যুক্তরাষ্ট্র (Padre Island International Beach, United States):
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ টেক্সাসে অবস্থান এই সমুদ্র সৈকতটির। পাদ্রে আইল্যান্ডের তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা দীর্ঘতম এ সমুদ্র সৈকতটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১১২ কিলোমিটার। অপার সৌন্দর্যের ভাণ্ডার এ সমুদ্র সৈকতে বসে আরো উপভোগ করা যায় সামুদ্রিক কচ্ছপের ঘোরাঘুরি, বিচিত্র প্রজাতির পাখি প্রভৃতি।
প্লেয়া নভিলেরো, মেক্সিকো (Playa Novell, Mexico):
প্রায় ৯০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সমুদ্র সৈকতটির অবস্থান হলো মেক্সিকোর টেকুয়ালা শহরে। গিনেস বুকের রেকর্ড অনুসারে এটি পৃথিবীর অন্যতম দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত। প্রতি বছর মেক্সিকোর উষ্ণতম মাস জুন থেকে আগষ্টে এখানে প্রচুর সমুদ্রপ্রেমী পর্যটকের সমাগম ঘটে। মাছ ধরা ও চিংড়ি চাষের জন্য ও এ সমুদ্র সৈকতটি অত্যন্ত জনপ্রিয়।
নাইনটি মাইল বীচ, নিউজিল্যান্ড (Ninety Mile Beach, New Zealand):
প্রাকৃতিক বিস্ময়ে ভরপুর নিউজিল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত এই সমুদ্র সৈকতটির দৈর্ঘ্য ৮৮ কিলোমিটার। উত্তর আইল্যান্ডে অবস্থিত এ সমুদ্র সৈকতটি ও চার পাশের পাহাড় – এ দুই ই পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষনীয়। ১৯৩২ সালের দিকে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিমানের রানওয়ে হিসেবে এটিকে ব্যবহার করা হতো।
ভার্জিনিয়া বীচ, যুক্তরাষ্ট্র (Virginia Beach, USA):
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থিত এ সমুদ্র সৈকতটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৫৬ কিলোমিটার। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের কাছে বেশ সুপরিচিত স্থান এটি, ভ্রমন প্রেমী বিদেশী পর্যটকদের জন্য ও অন্যতম আকর্ষনীয় স্থান। প্রতি বছর এ বীচে অনুষ্ঠিত হয় উত্তর আমেরিকার জনপ্রিয় ফুটবল প্রতিযোগিতা।
লং বীচ, যুক্তরাষ্ট্র (Long Beach, USA):
লং বীচ সমুদ্র সৈকতটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে অবস্থিত। লং বীচ পোর্টকে বিশ্বের দ্বিতীয় ব্যস্ততম সমুদ্র বন্দর বলা হয়। এই সমুদ্র সৈকতটির দৈর্ঘ্য ৪৫ কিলোমিটার। রোদ ঝলমলে এই সমুদ্র সৈকতটিতে সমুদ্রের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটকদের ভীড় জমে।
মিউজেনবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকা (Mesenberg, South Africa):
দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে অবস্থিত মিউজেনবার্গ সমুদ্র সৈকতটির দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ কিলোমিটার। এ সমুদ্র সৈকতে আগে সাদা হাঙ্গরও দেখা যেত। যারা সমুদ্রে সার্ফিং করতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য এটি হতে পারে ভ্রমনের অন্যতম আকর্ষনীয় স্থান। এটি বিশ্বের ব্যস্ততম সমুদ্র সৈকতের মধ্যে অন্যতম।
স্টকটন বীচ, অস্ট্রেলিয়া (Stockton Beach, Australia):
অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস এর পূর্ব দিকে স্টকটোন বীচটি অবস্থিত। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৩২ কিলোমিটার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানী বাহিনীর হামলার বিরুদ্ধে এ স্থানটি ছিলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখনো প্রতি বছর অস্ট্রেলিয়ার এই সমুদ্র সৈকতের দৃশ্য উপভোগ করতে আসে হাজার হাজার দেশী বিদেশী পর্যটক।