ঢাকা: দেশি আমের মৌসুম শেষের দিকে চলে আসায় রাজধানীর বাজারে এই জনপ্রিয় ফলটির দাম বেড়ে গেছে হঠাৎ করেই। বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বাড়ছে; তবে অনেক ক্রেতা অভিযোগ করেছেন, ‘সিজনের অজুহাতে’ একটি অসাধু সিন্ডিকেট কৃত্রিম সংকট তৈরি করে মূল্য বৃদ্ধি করছে।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) কাঠালবাগান, গ্রিনরোড, রাজাবাজার, কারওয়ান বাজার, মগবাজার, মালিবাগ ও রামপুরাসহ ঢাকার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে—বাজারে এখনো আম্রপালি, আশ্বিনা, ও বারি জাতের আমের যথেষ্ট সরবরাহ রয়েছে। কিন্তু দাম গত সপ্তাহের তুলনায় ৩০-৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেছে।
আমের জাত | বর্তমান দাম (প্রতি কেজি) | এক সপ্তাহ আগে |
---|---|---|
আম্রপালি | ১৮০-২২০ টাকা | ১২০-১৩০ টাকা |
ক্যাট আম্রপালি (ছোট) | ১০০-১২০ টাকা | ৫০-৬০ টাকা |
সুরমা ফজলি | ১৪০-১৫০ টাকা | ১০০-১২০ টাকা |
ব্যানানা আম | ২২০-২৪০ টাকা | ১৭০-১৮০ টাকা |
বারি জাত | ১০০-১২০ টাকা | ৮০-৯০ টাকা |
কাঁচা আশ্বিনা | ৪০-৫০ টাকা | ৩০-৪০ টাকা |
কারওয়ান বাজারের আম বিক্রেতা আলী আহমেদ বলেন, “মৌসুম প্রায় শেষ। হিমসাগর, ল্যাংড়া এখন আর পাওয়া যায় না। আম্রপালিও আড়তে কমে গেছে। আমরা বেশি দামে কিনছি, তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।”
মালিবাগের বিক্রেতা আসিফ আহমেদ বলেন, “আম তো পচনশীল পণ্য। এখানে স্টক রাখা যায় না। সরবরাহ কমলেই দাম বাড়ে—এটা স্বাভাবিক।”
তবে এই যুক্তি মানতে নারাজ ক্রেতারা। বাজারে আম কিনতে আসা আমিনুল ইসলাম বলেন, “এক সপ্তাহ আগে যে আম ১৭০ টাকায় কিনেছি, সেটা এখন ২৩০ টাকা। এত অল্প সময়ের মধ্যে এমন মূল্যবৃদ্ধি অযৌক্তিক।”
আরেক ক্রেতা আয়েশা খাতুন বলেন, “প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় এখনো অনেক আম বিক্রি হচ্ছে। দাম বাড়ানোর জন্য এটা শুধু সিজনের অজুহাত। এখানে একটা সিন্ডিকেট কাজ করছে। মনিটরিং নেই, তাই যা খুশি দাম নিচ্ছে।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষি বাজার বিশ্লেষক বলেন, “আমের মৌসুমের শেষপ্রান্তে কিছুটা দাম বৃদ্ধি স্বাভাবিক হলেও, ক্রমাগত বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও যদি দাম বাড়ে, তাহলে সেখানে বাজার নিয়ন্ত্রণের অভাব এবং অতিমুনাফার প্রবণতা কাজ করছে বলেই ধরা যায়।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ফলের মৌসুমে দাম স্বাভাবিক রাখতে বাজার মনিটরিং ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যকর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। নয়তো প্রতি মৌসুমেই ভোক্তারা এই ‘সিজনাল সিন্ডিকেট’-এর শিকার হবেন।