ফুটপাত দখল নিয়ে চলছে প্রতিযোগিতা, রমরমা ব্যবসা ও চাঁদাবাজী। এর বাইরে ফুটপাতের কোথাও গাছ, কোথাও আবার বিদ্যুত বা টেলিফোনের খুঁটি, সুইচ বক্স আছে। আছে পুলিশ বক্সও।
এতে পথচারীদের হাঁটা-চলার অসুবিধার পাশাপাশি সৃষ্টি হয় যানজটের। শৃঙ্খলা ফেরাতে নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও কাজে আসেনি কিছুই। ফুটপাত দূরের কথা রাস্তা দিয়ে হাঁটাও দুষ্কর। দখলের কারণে রাস্তা সরু হয়ে যাওয়ায় গাড়ি চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। ব্যস্ততম সড়কটিতে দিনের বেশিরভাগ সময় যানজট লেগেই থাকছে।
তবে সেই ফুটপাত দেখভালের দায়িত্ব চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক)। কেউ ফুটপাত দখল করলে উচ্ছেদের দায়িত্বও তাদের হলেও নিশ্চুপ চসিক। হকার মুক্ত করে চলাচলের রাস্তা নির্বিঘ্ন করার দাবি সাধারণ মানুষের। এতে ক্ষুব্ধ ও হতাশ চট্টগ্রাম নগরবাসী। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠেছে – ফুটপাত তুমি কার?
সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর বহদ্দারহাট, মোরাদপুর, অক্সিজেন, ২ নাম্বার গেইট, চকবাজার, কোতোয়ালি থানাধীন জুবিলী রোড, নিউ মার্কেট, জি.ই.সি, কর্ণেলহাট, এ কে খান, অলংকার, সাগরিকা, বড়পোল, দেওয়ানহাট, চৌমুহনী, আগ্রাবাদ, নিমতলা বিশ্ব রোড, ইপিজেড, পতেঙ্গা সিমেন্ট ক্রসিং, কাটগড়, এয়ারপোর্ট রোড, কাস্টমস মোড় ও নেভাল এভিনিউ সহ নগরজুড়ে মূল সড়কের সামনের ফুটপাত এবং সড়ক দখল করে রেখেছেন দোকান মালিক, ব্যবসায়ী ও চাঁদাবাজচক্ররা। কোথাও কোথাও ফুটপাতে হকার বসিয়ে, সড়কে অবৈধ গাড়ি স্ট্যান্ড কিংবা ভ্যানগাড়ির ভাসমান বাজার বসিয়ে হাতিয়ে নেয়া হয় টাকা।
এর নেপথ্যে রয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী সিন্ডিকেট, রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা। কোথাও কোথাও পুলিশও নিয়মিত মাসোহারা বা চাঁদা নেয় অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে। এ কারণে ফুটপাত ও সড়ক দখলমুক্ত হচ্ছে না। এদের উচ্ছেদ করা হলেও আবার বসে যায়। তাহলে কি পথচারীদের চলাচলের জন্য ফুটপাত, নাকি ব্যাবসায়ী ও চাঁদাবাজচক্রদের জন্য, এটি সাধারন মানুষের প্রশ্ন?
পথচারীরা বলেন, আমাদের চলাচলের সমস্যা হয়। মাঝে মাঝে তো হাটতে পারি না কারণ ফুটপাত তাদের দখলে। এসব দেখার কেউ নেই। তবে নতুন মেয়র নির্বাচিত হলে যানজটমুক্ত নগরী গড়তে হকারদের নিয়মের মধ্যে আনার আশ্বাস দেন প্রার্থীরা। নগরবাসীর প্রত্যাশা ফুটপাত দখলমুক্ত করতে, নির্বাচনে জয়ী মেয়র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন বললেও, শুধু মাত্র নির্বাচনে জয় হয়ে ক্ষমতার জন্য এই সব কথা বলেন তারা।
ব্যবসায়ীরা বলেন, লাখ টাকা খরচ করে ব্যবসা করছি কিন্তু লাভ নেই। ব্যবসা নেই কারণ ফুটপাতের দোকানগুলোর জন্য।
হকাররা বলছেন বিভিন্ন সময়ে তাদের পুনর্বাসনের কথা বলা হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। হকাররা বলেন, দেশে তো কর্মসংস্থান নেই। কী আর করবো কিছু করে তো চলতে হবে।
সূত্রঃ চট্টগ্রামের পাতা