মাদক মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী মোঃ কুতুব উদ্দিন’কে দীর্ঘ ১৪ বছর পর নারায়ণগঞ্জ হতে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭
আব্দুল মুবিন, চট্টগ্রাম
আসামি মোঃ কুতুব উদ্দিন (৪২) গত ২০ জুন ২০০৭ এবং ০২ মার্চ ২০০৯ইং তারিখে চট্টগ্রাম মহানগরীর কোতোয়ালি থানা এলাকায় পুলিশের হাতে আফিম/ কোকেন নিয়ে গাড়িসহ আটক হয়।
পরবর্তীতে পুলিশ বাদী হয়ে বর্নিত আসামির বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মহানগরীর কোতয়ালি থানায় দুটি মামলা দায়ের করেন যার মামলা নম্বর- ৯০৮/০৯ তারিখ ০২ মার্চ ২০০৯ এবং ৮৪৩/০৭ তারিখ ২০ জুন ২০০৭ ধারাঃ ১৯৯০ সনের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯ (১) এর ৩(খ) ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯ (১) এর ৩ (খ) ৩৩ (১)। মামলা রুজুর কয়েকমাস পর আসামি জামিনে বের হয়ে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়। দীর্ঘদিন পলাতক থাকায় ও কোর্টে হাজিরা না দেওয়ার আসামীর অনুপস্থিতে বিজ্ঞ আদালত পৃথক দুটি মামলায় কুতুব উদ্দিনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন।
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বর্ণিত মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামীকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরধারী এবং ছায়াতদন্ত অব্যাহত রাখে। নজরধারীর এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সূত্রে জানতে পারে যে, বর্ণিত আসামী আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে নারায়নগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন সাইনবোর্ড এলাকায় অবস্থান করছে।
উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল গত ১৯ মে ২০২৩ ইং তারিখ ১১৩০ ঘটিকায় বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামী মোঃ কুতুব উদ্দিন (৪২), পিতা- মৃত ডাঃ গোলাম মাওলা, সাং-বাইনঝুড়ি, থানা- চন্দনাইশ, জেলা- চট্টগ্রাম’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে সে বর্ণিত মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী মর্মে স্বীকার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায় সে আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে দীর্ঘ ১৪ বছর যাবৎ ঢাকা ও নারায়নগঞ্জ জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন পরিচয়ে আত্মগোপন করে ছিল।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, আসামী কুতুবউদ্দিন জামিনে বের হয়ে আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে ২০১০/ ২০১১ সালের দিকে ঢাকায় আত্মাগোপন করে।
প্রাথমিকভাবে সে ঢাকায় বিভিন্ন পেশায় কাজ করলেও একটি পর্যায়ে ঢাকার শাহবাগ এলাকায় বিভিন্ন গার্মেন্টস থেকে রিজেক্ট হওয়া পন্য ক্রয় করে ঢাকা সিটিতে বিভিন্ন খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে সরবরাহের ব্যবসা করত। সে এ পেশার সাথে দীর্ঘ ১০ বছর জড়িত ছিলেন। কুতুবউদ্দিন তার পরিবারের সাথেও সচরাচর দেখা করার জন্য চট্টগ্রামে আসত না।
তার পরিবার ঢাকা গিয়ে তার সাথে দেখা করে আসত। এমনকি সে সরাসরি পরিবারের সাথে মোবাইল ফোনেও কখনো যোগাযোগ করত না। পরবর্তীতে ব্যবসায় তেমন লাভ না হওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ বেশি দেখে সর্বশেষ নারায়নগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন সাইনবোর্ড এলাকায় ৪/ ৫ জনের শেয়ারে মিনার রেষ্টুরেন্ট এন্ড সুইটস এর ব্যবসা শুরু করে।
গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।