বেশ কয়েক বছর ধরেই বায়ুদূষণের শিকার বিশ্বের বহু ছোট-বড় শহর। মেগাসিটি ঢাকার বাতাসেও নেই স্বস্তির খবর। মাঝে মাঝে বৃষ্টি হলে বায়ুমানে কিছুটা উন্নতি হয়। সম্প্রতি বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় ঢাকার বায়ুমান আবারও অবনতির দিকে। শুক্রবার (৩ নভেম্বর) বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে রাজধানী
এদিন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে (একিউআই) ঢাকার স্কোর ১৭৬, যা ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত। আর একিউআই স্কোর ৫৮৭ নিয়ে এ তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লি।
এছাড়া একিউআই স্কোর ৩৩৫ নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর শহর। একিউআই স্কোর ২৩২ নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ইরাকের বাগদাদ শহর। আর ১৬৬ স্কোর নিয়ে পঞ্চম স্থানে আছে কুয়েতের কুয়েত সিটি।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার এ তালিকা প্রকাশ করে থাকে প্রতিনিয়ত।
একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়; আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু বলে মনে করা হয়।
২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। এদিকে ৩০১ থেকে ৪০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। সাধারণত একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে; যেমন: বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।
বায়ুদূষণ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে থাকে। এটা সব বয়সি মানুষের জন্য ক্ষতিকর। তবে শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি, প্রবীণ ও অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য বায়ুদূষণ খুবই ক্ষতিকর।
সম্প্রতি রাজধানীর একটি হোটেলে ‘সেমিনার অন ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যাডাপ্টেশন, অ্যাগ্রিকালচারাল ইনোভেশন অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স’ শীর্ষক এক সেমিনারে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও উন্নয়ন চিন্তাবিদ এবং ঢাকা স্কুল অব ইকোনোমিকসের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেছেন, বিশ্বে পরিবেশ দূষণের মাধ্যমে বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়িয়ে জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে উন্নত বিশ্বের দেশগুলো। অথচ জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশের মতো দেশগুলো।
‘বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য মানব সম্প্রদায় নরকের দরজা খুলে দিয়েছে, যা বিশ্বকে জলবায়ু বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত করছে’- জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের এ উদ্ধৃতির প্রসঙ্গ টেনে ড. খলীকুজ্জমান আরও বলেন, দূষণের কারণে বিশ্ব আজ জলবায়ু বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে বাড়ছে বায়ুদূষণ।