রাজশাহীর তানোরে সাংবাদিক আবুল কাশেম বাবুর উপরে পুর্ব পরিকল্পিত ভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় কোপ দেওয়া হয়েছে। এতেই ওই সাংবাদিকের মাথায় জখমে বিশটির মত সেলাই লেগেছে। গুরুতর আহত সাংবাদিক উপজেলার কামারগাঁ ইউপির শ্রীখন্ডা গ্রামের আবুল হাসানের পুত্র।
শনিবার ইফতারের আগ মুহুর্তে শ্রীখন্ডা মোড়ে ঘটে মর্মান্তিক ঘটনাটি। আহত সাংবাদিক বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আশঙ্কা জনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এঘটনায় সাংবাদিক মহলসহ এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। সারাদেশে উঠছে প্রতিবাদে ঝড়।
জানা গেছে, শনিবার বিকেলের দিকে বাড়ি থেকে ইফতার কিনতে শ্রীখন্ডা মোড়ে আসেন সাংবাদিক আবুল কাশেম বাবু। তিনি নিজের বাইকে বসেই ইফতার কিনছিলেন। এ অবস্হায় মোড়ের ঔষধ ব্যবসায়ী আলমগীর ধারালো অস্ত্র দিয়ে পিছন থেকে মাথায় কোপ দেন। সাথে সাথে তিনি মাটিতে পড়ে গেলে আলমগীরের স্ত্রী কামারগাঁ ইউপির সংরক্ষিত সদস্য বেলি খাতুনও মারধর করেন। সাংবাদিক কাশেমের ডাক চিৎকারে স্হানীয়রা এসে উদ্ধার করে মেডিকেলে নিয়ে আসেন।
আবুল কাশেম জাতীয় অর্থনীতি পত্রিকার রাজশাহী প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
কাশেমের দুলাভাই সেলিম জানান, মাথায় এমন ভাবে কোপ দেওয়া হয়েছে মাথা জখম মগজ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছিল। হাসপাতালের ডাক্তারেরা প্রথমে রেফার্ড করতে চাচ্ছিল। কিন্তু কোনভাবেই রক্ত বন্ধ হচ্ছিল না। তবে সেলাই দেওয়ার পর রক্ত বন্ধ হয়েছে এজন্যই এখানে রেখেছে। যদি রেফার্ড করত বাঁচত কিনা সন্দেহ। কারন প্রচুর রক্ত বের হচ্ছিল। রোজার দিনে মানুষ এভাবে রোজাদারকে মারতে পারে কল্পনাতীত। কাশেমও রোজা ছিলেন।
মেডিকেলে সাংবাদিক আবুল কাশেম বাবুর সাথে কথা বলা হলে তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে আমাকে মেরে ফেলার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিল আলমগীর ও তার স্ত্রী ডাঃ বেলি খাতুন। এরই জের ধরে আমি ইফতার কিনতে আসামাত্রই ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করে এরপর আমি আর কিছুই বলতে পারব না। আমি রোজা ছিলাম। রোজাদার ব্যাক্তিকে রক্ত ঝরাবে ভাবতেই পারছি না।
আলমগীর অভিযোগ, অস্বীকার করে বলেন আমি তার মাথায় আঘাত করিনি।তার ছেলে আমাকে আঘাত করার সময় কাশেমের মাথায় আঘাত করেছে।
তবে বেশকিছু প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানান, গত রোমজান মাসে আলমগীর সরকারি টাকা দেওয়ার নামে অনেকের কাছে আইডি কার্ড নেয়। কিন্তু কোন কিছুই করে দেয়নি এবং যারা কার্ড দিয়েছিল তারা আলমগীরের কাছে কেন হয়নি, কি কারনে ইত্যাদি ইত্যাদি বিষয়ে জানতে চান। এসব নিয়ে আবুল কাশেম বাবু তার ফেসবুক আইডিতে কারো নাম ব্যবহার না করে একটি পোস্ট দেন। একারনে বিকেলের দিকে আলমগীরের ঔষধের দোকানে তার স্ত্রী এসে উভয়ে কাশেম মোড়ে এলেই মারা হবে এমন সিদ্ধান্ত নেয়। কাশেম মোড়ে আসামাত্রই আলমগীর ঘুষি মারেন। সংবাদ পেয়ে কাশের ছেলে আলমগীর কে খোড়ির চলা দিয়ে আঘাত করে। তখন আলমগীর ধারালো কিছু দিয়ে কাশের মাথায় প্রচন্ড ভাবে আঘাত করে। আঘাতের সাথে সাথে কাশেমের মাথা থেকে জোর গতিতে রক্ত বের হওয়া শুরু করে। এসময় স্বজনরা মাথায় গামসা দিয়ে মুড়িয়ে মেডিকেলে নেওয়া হয়। যদি কাশেম অন্যায় কিছু লিখে থেকে আইন আদালত আছে। তাই বলে এভামে মাথা ফাটিয়ে দিবে, তাও রোজা থাকা অবস্থায় এটা ঠিক না।ছেলে কখনো পিতার মাথায় আঘাত করবে এটা অবাস্তব। আলমগীর নিজেই আঘাত করেছে। রোজার দিনে এমন ঘটনার কঠিন শাস্তি হওয়া দরকার। তার স্ত্রী সংরক্ষিত সদস্য হয়েছে বলে আলমগীর সব কিনে নিয়েছে।
প্রতিবেদন লিখা পর্যন্ত মামলার প্রস্তুতি চলছল বলে জানান কাশেমের দুলাভাই সেলিম।
এদিকে সাংবাদিক আবুল কাসেম বাবুর উপর এমন হীন, বর্বর ও নৃশংস হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক সোসাইটি (বিএমএসএস)-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান খন্দকার আছিফুর রহমান, মহাসচিব মোঃ সুমন সরদার সহ সকল কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।