সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ ঝরেছে ৭,৮০৯

করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কারণে, ৮৫ দিন গণপরিবহন বন্ধ থাকার পরেও, (২০২১) গত এক বছরে, ৫ হাজার ৬২৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে ৭ হাজার ৮০৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৯ হাজার ৩৯ জন।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী । ছবিঃ সংগৃহীত

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী । ছবিঃ সংগৃহীত

এর আগের বছর ৪ হাজার ৮৯১টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৬ হাজার ৬৮৬ জন। আর আহত হয়েছেন ৮ হাজার ৬০০ জন।

রোববার (২৩ জানুয়ারি) আজ সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ তথ্য তুলে ধরেন। এসময় তিনি বার্ষিক সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন-২০২১ প্রকাশ করেন।

প্রতিবেদেনে দেখা গেছে, এসব দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন ২ হাজার ৩৫০ জন চালক, ১ হাজার ৭১৫ জন পথচারী, ১ হাজার ১৭ জন পরিবহনশ্রমিক, ৪৩০ জন ছাত্রছাত্রী, ১১১ জন শিক্ষক, ২৩৭ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ১ হাজার ৭৬ জন নারী, ৬৩৮ জন শিশু, ৪২ জন সাংবাদিক, ২৭ জন চিকিৎসক, ১৪ জন আইনজীবী ও ১৮ জন প্রকৌশলী এবং ১৬১ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও ১০ জন মুক্তিযোদ্ধা।

উল্লেখিত সড়ক দুর্ঘটনায় সর্বমোট ৭ হাজার ৭৩০টি যানবাহনের পরিচয় গণমাধ্যমে পাওয়া গেছে, যার ৩০ দশমিক ৪২ শতাংশ ট্রাক, পিকআপ, লরি ও কাভার্ড ভ্যান; ২৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ বাস, ৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা ৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৮ দশমিক ৬৮ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা, রিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইক, ৬ দশমিক ১৭ শতাংশ কার-মাইক্রোবাস।

সংগটিত মোট দুর্ঘটনার ৫৪ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ পথচারীকে গাড়িচাপা দেওয়ার ঘটনা, ২২ দশমিক ১৭ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৬ দশমিক ১৩ শতাংশ খাদে পড়ে, ৬ দশমিক ২১ শতাংশ বিবিধ কারণে, শূন্য দশমিক ৫৩ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁছিয়ে এবং শূন্য দশমিক ৮৭ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

এদিকে, ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় সংঘটিত যানবাহনের শূন্য দশমিক ৭৯ শতাংশ মোটরসাইকেলে, শূন্য দশমিক ৭৬ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাসে শূন্য দশমিক ২১ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেলেও করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতিতে ৮৫ দিন গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ২ দশমিক ৬৩ শতাংশ বাস দুর্ঘটনা, ১ শতাংশ নসিমন-মাহিন্দ্র-লেগুনা দুর্ঘটনা, শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক দুর্ঘটনা কমেছে।

এ সময় বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণাকেন্দ্রের পরিচালক ড. হাদিউজ্জামান বলেন, দুর্ঘটনা একটা জাতীয় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এত আইন আছে, সুপারিশ আছে, কিন্তু তার কোনো কিছুই বাস্তবায়ন নেই।

মানবাধিকারকর্মী নুর খাল লিটন বলেন, গণপরিবহনে নারী যাত্রীদের যেভাবে হেনস্তা করা হয়, তা বলার মতো নয়। দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় দেখা যায়, চালকদের কোনো বিশ্রাম দেওয়া হয় না। সারা দিন গাড়ি চালাচ্ছে, ফলে দুর্ঘটনা ঘটছে। তা ছাড়া মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। কিন্তু তার কোনো নিতিমালা নেই। সবকিছুর মূলে রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকতে হবে।

Please follow and like us:

     এই বিভাগের আরো খবর

আমাদের পেজ লাইক করুন

error: Content is protected !!