বান্দরবানের রুমায় সেনাবাহিনীর টহল দলের ওপর জেএসএস সন্তু গ্রুপের সদস্যরা হামলা চালিয়েছে। এ সময় গোলাগুলিতে সেনাবাহিনীর এক সদস্য নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া গোলাগুলিতে জেএসএস(সন্তু) গ্রুপের তিন সদস্য নিহত হয়েছেন। গোলাগুলির ঘটনায় একজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টায় বান্দরবানের রুমা উপজেলার রুমা-রাঙামাটি সীমান্তবর্তী দুর্গম বতিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আর্মি ২৮ বীর রুমা জোন থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

নিহত সেনা কর্মকর্তার নাম হাবিবুর রহমান, তিনি সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার ছিলেন। তবে নিহত জনসংহতি সমিতির ৩ জনের নাম জানা যায়নি।

এদিকে আজ বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে হতাহতদের উদ্ধার করে সিএমএইচ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঘটনাস্থল থেকে ১টি এসএমজি, ৩ টি দেশীয় বন্দুক, ৩ টি সেনাবাহিনীর আদলে পোশাক, ২৮০ রাউন্ড গুলিসহ বিপুল গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। এদিকে ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

বান্দরবানে সেনাবাহিনী-সন্ত্রাসীদের গোলাগুলি, নিহত ৪

বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় আসছে আফগানিস্তান ক্রিকেট দল। এই সফরে টাইগারদের বিপক্ষে তিনটি ওয়ানডে ও দুটি টি-টুয়েন্টি খেলবেন রশিদ খান-হজরতউল্লাহ জাজাইরা। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) মধ্যেই এই সিরিজের প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

এই সিরিজের ভেন্যু এখনো চূড়ান্ত করেনি বিসিবি। তবে চট্টগ্রামে ওয়ানডে সিরিজ এবং ঢাকায় টি-টুয়েন্টি সিরিজ আয়োজনের ব্যাপারে পরিকল্পনা করে রেখেছে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন বলেন, ‘আফগানিস্তানের বিপক্ষে যে দুটি টি-টুয়েন্টি সিরিজ হবে সেগুলো ঢাকা এবং চট্টগ্রামে আমরা আয়োজন করব। ভ্রমণের ওপর সরকারের যে দিক নির্দেশনা আছে এবং লজিস্টিক যে সাপোর্ট আমরা করতে পারি এর উপর নির্ধারণ করে আমরা দুটি ভেন্যু ঠিক করেছি।’

তিনি বলেন, ‘ওয়ানডেগুলো আমরা চট্টগ্রামে ও টি-টুয়েন্টিগুলো ঢাকায় আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আফগানিস্তান আগামী ১২ ফেব্রুয়ারিতে আসবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।’

চলমান বিপিএলে দলগুলোর জৈব সুরক্ষা বলয় (বায়োবাবল) নিয়ে খানিকটা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। কয়েকদিন আগেই বলয় ভেঙে হোটেল থেকে বেরিয়ে আসেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ক্রিকেটার মেহেদী হাসান মিরাজ। যদিও পরবর্তীতে আবারো হোটেলে ফিরে যান তিনি।

সঙ্গত কারণেই আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশের সিরিজে জৈব সুরক্ষা বলয় আরও বেশি ভালো এবং আন্তর্জাতিক মানের হচ্ছে। বিসিবির প্রধান নির্বাহী আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক একটা মান আছে জৈব সুরক্ষা বলয়ের। আমরা এই সিরিজে অবশ্যই সেটা ব্যবহার করব।’

১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে আসছে আফগানিস্তান

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার মুরুং বাজার এলাকায় বেইলি ব্রিজ ভেঙে চালভর্তি ট্রাক খাদে পড়ে আব্দুল গফুর (৫০) নামে একজন নিহত হয়েছে। ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় বান্দরবানের সঙ্গে রুমার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

আজ বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে রোয়াংছড়ি উপজেলার মুরুং বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ট্রাক ড্রাইভার সাতকানিয়ার পুরানগড় এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বুধবার দুপুরে বান্দরবান থেকে চালভর্তি একটি ট্রাক রুমায় যাওয়ার সময় রোয়াংছড়ি উপজেলার মুরুং বাজার এলাকায় পৌঁছালে বেইলি ব্রিজ ভেঙে ট্রাকটি ঝিরিতে পড়ে যায়। এ সময় ট্রাকচালক আব্দুল গফুর ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এ ঘটনায় বান্দরবানের সঙ্গে রুমার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে দু’পাড়ের অসংখ্য যাত্রী।

রোয়াংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান জানান, রুমায় যাওয়ার সময় রোয়াংছড়ি ইউনিয়নের মুরুং বাজার এলাকায় একটি ট্রাক বেইলি ব্রিজ ভেঙে নিচে পড়ে যায়। এ ঘটনায় ট্রাক ড্রাইভার মারা গেছে। নিহতকে উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।

বান্দরবানে বেইলি ব্রিজ ভেঙে ট্রাক খাদে, নিহত ১

চার্জে বসিয়ে মোবাইলে গেম খেলছিলেন গৃহবধূ। পরিণতি হল ভয়াবহ। মোবাইল বিস্ফোরণে প্রাণ গেল বধূর। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপি থানার রামকৃষ্ণপুরে।

মৃত বধূর নাম শম্পা বৈরাগী। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপি থানার রামকৃষ্ণপুরের গরাণকাঠি এলাকায় থাকতেন তিনি। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুরে বাড়িতেই ছিলেন তিনি। মোবাইল ফোনটি চার্জে বসিয়ে গেম খেলছিলেন শম্পাদেবী। আচমকাই বিকট শব্দ পান প্রতিবেশীরা। ঘরে গিয়ে দেখেন দগ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছেন শম্পাদেবী। তড়িঘড়ি তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় কুলপি গ্রামীণ হাসপাতালে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে কলকাতার চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন চিকিৎসকেরা। মঙ্গলবার দুপুরে সেখানেই মৃত্যু হয় গৃহবধূ শম্পা বৈরাগীর।

প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, মোবাইল বিস্ফোরণের কারণেই মৃত্যু হয়েছে মহিলার। ঘটনার পর থেকে রীতিমতো আতঙ্কিত এলাকাবাসীরা। তবে কী কারণে মোবাইল ফোন বিস্ফোরণ ঘটল, কীভাবে গৃহবধূর গায়ে আগুন লাগল তার কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়েছে, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে কুলপি থানার পুলিশ।

চার্জে দিয়ে গেম খেলার সময় মোবাইল বিস্ফোরণে গৃহবধূর মৃত্যু

কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার ইউসুফপুরে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে দুই প্রার্থীর সমর্থদের মধ্যে সংঘর্ষের, নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর এক সমর্থকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এ ছাড়া অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।

গতকাল মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ইউনিয়নের ইউসুফপুর ধানিস মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী কবির হোসেন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মাজহারুল হক মামুনের সমর্থকদের মধ্যে মারামারির সময় নিচে পড়ে গিয়ে সুরুজ মিয়া নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন বলে জানতে পেরেছি। মৃত সুরুজ মিয়া (৫০) ইউসুফপুর এলাকার বাসিন্দা। তবে ওই বৃদ্ধের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি।

স্থানীয়রা জানায়, নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ইউছুফপুর গ্রামে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী কবির হোসেন ও ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী মাজহারুল হক মামুনের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় লোকজনের ধাক্কায় মাটিতে পড়ে গিয়ে সুরুজ মিয়া (৫০) নামের ওই বৃদ্ধ আহত হন। পরে রাত ১১টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোঘণা করেন।

নৌকার প্রার্থী কবির হোসেনের অভিযোগ, স্বতন্ত্র প্রার্থী মাজহারুল হক মামুন তার লোকজন নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। হামলায় তিনি নিজে, সমর্থক খাইরুল ইসলাম ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সুমন রানাসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। মামুনের লোকজনের হামলায় মাটিতে লুটে পড়ে সুরুজ মিয়া মারা গেছেন। তিনি এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাজহারুল হক মামুন জানান, এ হামলার সঙ্গে তিনি বা তার কোনো সমর্থক জড়িত নয়। প্রতিপক্ষ নিজেরাই এ ঘটনা সৃষ্টি করেছে। এখন তাদের ওপর দায় চাপিয়ে নির্বাচনে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে।

দেবীদ্বারে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে ১ জনের মৃত্যু

দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে প্রাইভেট কারের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ঘটনাস্থলে প্রাইভেট কারের তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন।

আজ বুধবার সকাল পৌনে ৭টার দিকে উপজেলার ঘোড়াঘাট রেলঘুণ্টি নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিরামপুর থানার ওসি সুমন কুমার মহন্ত।

নিহতদের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে বাকি দুজনের নাম পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। পার্বতীপুর মধ্যপাড়া এলাকার বাসিন্দা হালিম সাহার ছেলে হাফিজুর রহমান শাহ (৪০) ৷ প্রাইভেটকারের চালকসহ চারজন পার্বতীপুর থেকে জয়পুরহাটে যাচ্ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল পৌনে ৭টার দিকে উপজেলার ঘোড়াঘাট রেলঘুণ্টি এলাকায় রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় ঢাকা থেকে কুড়িগ্রাম গামী দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনটি ওই প্রাইভেটকারে ধাক্কা দিয়ে ৫০ গজ দূরে টেনে নিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়। তবে প্রাইভেটকারচালক দুর্ঘটনার আগে নেমে পালিয়ে যান।

নিহতদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য তিন লাশ এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বিরামপুরে ট্রেনের ধাক্কায় প্রাইভেট কারের ৩ যাত্রী নিহত

সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যাকাণ্ডে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেছেন আদালত। আজ সোমবার (৩১ জানুয়ারি) কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল এ রায় ঘোষণা করেন।

বরখাস্তকৃত এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাগর দেব ও রুবেল শর্মাসহ ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া অন্যরা হলেন নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন। এই ৩ জনই টেকনাফ থানায় পুলিশের দায়ের করা মামলার সাক্ষী ছিলেন; তারা টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা।

সেই সাথে এপিবিএন এর এসআই মো. শাহজাহান, এএসআই লিটন মিয়া এবং কনস্টেবল যথাক্রমে রাজিব, আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও মো. আবদুল্লাহকে খালাস দেয়া হয়েছে। পুলিশের এই সাত সদস্যকেও সিনহা হত্যার ঘটনার পর বরাখাস্ত করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, পুলিশ থেকে বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ সবশেষ টেকনাফ থানায় দায়িত্ব পালন করেন। অন্যদিকে বরখাস্ত হওয়ার আগে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন পরিদর্শক ছিলেন লিয়াকত আলী। আর এই কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক ছিলেন নন্দদুলাল রক্ষিত। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত রুবেল শর্মা ওসি প্রদীপের দেহরক্ষী ছিলেন।

এর আগে মামলার বিবরণীতে আদালত মন্তব্য করেন, লিয়াকত ও নন্দদুলালের সক্রিয় ভূমিকা প্রমাণিত হয়েছে। সেই সাথে গুলি করার পর মাটিতে লুটিয়ে পড়া সিনহাকে লাথি মারার অভিযোগও প্রমাণিত হয়েছে ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে। এছাড়া এই হত্যাকাণ্ড সম্পূর্ণভাবে পূর্ব পরিকল্পিত বলেও মন্তব্য করা হয়েছে।

এর আগে সোমবার (৩১ জানুয়ারি) দুুপুর ২টার দিকে চাঞ্চল্যকর মেজর (অব.) সিনহা হত্যা মামলার রায় ঘোষণা সংক্রান্ত কার্যক্রম শুরু হয়। ৩০০ পৃষ্ঠার রায় পড়ে শুনানো হয়।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাত সাড়ে নয়টায় কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের তৎকালীন কর্মকর্তা পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন সিনহা মো. রাশেদ খান। তার সাথে থাকা সাহেদুল ইসলামকে (সিফাত) পুলিশ গ্রেফতার করে। সিনহা কক্সবাজারে যে রিসোর্টে ছিলেন, সেই নীলিমা রিসোর্ট থেকে তার তথ্যচিত্র নির্মাণ সহযোগী শিপ্রা দেবনাথ ও তাহসিন রিফাত নুরকে আটক করা হয়। পরে তাহসিনকে ছেড়ে দিলেও শিপ্রা ও সিফাতকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। এ ঘটনায় দেশজুড়ে চাঞ্চল্য দেখা দেয়। শিপ্রা ও সিফাত জামিনে মুক্তি পান।

সিনহা হত্যার ঘটনায় সে সময় চারটি মামলা হয়। ঘটনার পরপরই পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করে। এর মধ্যে দুটি মামলা হয় টেকনাফ থানায়, একটি রামু থানায়। তিনটি মামলার দুটি মাদক রাখার অভিযোগে এবং একটি পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে।

অপরদিকে, হত্যা মামলা দায়ের করেন সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। ওই বছরের ৫ আগস্ট আদালতে করা ওই মামলায় তিনি টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ পুলিশের নয় সদস্যকে আসামি করেন। সবগুলো মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় র‌্যাব। প্রদীপ কুমার দাশ, লিয়াকত আলীসহ ১৪ জনকে গ্রেফতার করে তারা। এদের মধ্যে ১১ জন পুলিশ আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য ও ৩ জন গ্রামবাসী। পুলিশের করা তিনটি মামলার অভিযোগের কোনো সত্যতা না পাওয়ায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. খাইরুল ইসলাম।

আর হত্যা মামলায় গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে আসামি করে কক্সবাজার আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় র‍্যাব। আসামিদের মধ্যে ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন । তবে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি।

গত বছরের ২৭ জুন প্রদীপসহ ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এই মামলার বিচার শুরু হয়। অভিযোগপত্রে থাকা ৮৩ সাক্ষীর মধ্যে ৬৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। গত ১২ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আদালত রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। আর আজ ঘোষণা হলো চাঞ্চল্যকর মামলাটির রায়।

সিনহা হত্যার রায়: ওসি প্রদীপ ও পরিদর্শক লিয়াকতের ফাঁসির আদেশ

আমাদের পেজ লাইক করুন

error: Content is protected !!