পরিবেশবাদী সংগঠন দ্য নিউ ক্লাইমেট এর এক প্রতিবেদন অনুসারে, বিশ্বের বড় বড় কোম্পানিগুলো জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে নিজেদের প্রতিশ্রুত কর্মসূচি বাস্তবায়ন না করে মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়ে যাচ্ছে। বৃটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গুগল, অ্যামাজন, অ্যাপল ও নেসলেসহ বিশ্বের ২৫ টি কোম্পানির ওপর এই সমীক্ষা চালিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। অবশ্য কিছু কিছু কোম্পানি বিবিসি নিউজকে বলেছে যে, তারা দ্য নিউ ক্লাইমেট-এর প্রতিবেদনে ব্যবহৃত কিছু পদ্ধতির সাথে একমত নয় এবং জলবায়ু পরিবর্তন রোধে পদক্ষেপ নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

কর্পোরেট কোম্পানিগুলোর বক্তব্যঃ 

বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ই-কমার্স সাইট অ্যামাজন এক বিবৃতিতে বলেছে, আমরা (জলবায়ুর পরিবর্তনে) এই উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যগুলো নির্ধারণ করেছি, কারণ আমরা জানি যে, জলবায়ু পরিবর্তন একটি গুরুতর সমস্যা। আর এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি পদক্ষেপ প্রয়োজন। ২০৪০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনা আমাদের লক্ষ্য। আর তাই অ্যামাজন ২০২৫ সালের মধ্যে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি দিয়ে সকল কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

এদিকে সুইজারল্যান্ডের খাদ্য প্রস্তুতকারক বহুজাতিক কোম্পানি নেসলে মন্তব্য করেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে আমাদের কার্যক্রম এবং প্রতিশ্রুতির পর্যালোচনাকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে নিউ ক্লাইমেট ইনস্টিটিউটের ‘কর্পোরেট ক্লাইমেট রেসপন্সিবিলিটি মনিটর’ (সিসিআরএম) প্রতিবেদনে আমাদের কর্মপদ্ধতির বোঝার ঘাটতি রয়েছে এবং এতে উল্লেখযোগ্য কিছু ভুলও আছে।

‘কর্পোরেট ক্লাইমেট রেসপনসিবিলিটি মনিটর’ পরিচালনা করেছেন অলাভজনক সংস্থা ‘নিউ ক্লাইমেট ইনস্টিটিউট’ এবং ‘কার্বন মার্কেট ওয়াচ’। গ্রিনহাউস-গ্যাস বা কার্বন নির্গমন কমিয়ে শূন্যে পৌঁছানোর লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি অবস্থান দিয়েছে।

যা বললেন গবেষণাটির প্রধানঃ

সমীক্ষাটির প্রধান টমাস ডে বিবিসি নিউজকে বলেছেন, তার দল মূলত কর্পোরেট বিশ্বের ভাল দিকগুলো আবিষ্কার করতে চেয়েছিল। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন রোধে নিজেদের প্রতিশ্রুতির বিষয়ে কোম্পানীগুলোর মিথ্যাচার দেখে তারা বিস্মিত এবং হতাশ। প্রতিবেদটির প্রধান বলেন, যেভাবে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো জলবায়ু পরিবর্তনে নিজেদের প্রতিশ্রুতি দেয় সেটাও একটা সমস্যা। গবেষণায় দেখা গেছে, তারা যা বলে আর যা করে তার মধ্যে অনেক পার্থক্য। ভোক্তাদের জন্য সত্যটা জানা কঠিন হয়ে পড়ে। তিনি আরও বলেন, এমনকি যেই কোম্পানিগুলো জলবায়ু পরিবর্তন রোধে দায়িত্বশীলতা দেখাচ্ছে তারাও অনেক কিছু বাড়িয়ে বলছে।

এই গবেষণায় সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে আন্তরিকতার বিভিন্ন রেটিং দিয়েছে। কিছু কিছু কোম্পানি আপেক্ষিকভাবে কার্বন নিঃসরণ কমানোয় দায়িত্বশীলতা প্রদর্শন করেছে। তবে সব কোম্পানিই আরও ভালো করতে পারতো। এতে বলা হয়েছে, ২৫টির মধ্যে মাত্র ৩ টি কোম্পানি ৯০% কার্বন নিঃসরণে পুরোপুরি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল। সেগুলো হচ্ছে শিপিং কোম্পানি মেয়ার্স্ক, টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি ভোডাফোন এবং ডাচ টেলিকম।

বিজ্ঞানীদের মতামতঃ

বিজ্ঞানীরা বলছেন যে, বিশ্বকে অবশ্যই ২০৫০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি কমিয়ে আনতে হবে। অর্থাৎ, বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ শূন্যে নামাতে হবে। এই লক্ষ্য অর্জন করতে হলে কার্বন নিঃসরণ থামাতে হবে। এক্ষেত্রে বড় বড় কোম্পানিগুলো তাদের নিজস্ব লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। উদাহরণস্বরূপ, মার্কিন টেক জায়ান্ট গুগল ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বনমুক্ত হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। অপরদিকে ফার্নিচার কোম্পানি ইকা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ২০৩০ সালের মধ্যে পুরোপুরি পরিবেশবান্ধব হওয়ার।

যে ২৫ টি কোম্পানির ওপর সমীক্ষাটি হয়েছে! 

মিয়ার্স্ক, অ্যাপল, ভোডাফোন, অ্যামাজন, ডয়েচেস টেলিকম, ইনেল, গ্লাস্কোস্মিথক্লিন, গুগল,হিতাচি, ইকা, ভেইল, ভক্সওয়াগেন, ওয়ালমার্ট, এক্সেঞ্চার, বিএমডব্লিউ গ্রুপ, ক্যারিফোর, সিভিএস হেলথ, ডিএইচ এল, ই অন সে, জেবিএস, নেসলে, নোভার্টিস, সেইন্ট-গোবিন ও ইউনিলিভার।

জলবায়ু পরিবর্তন: প্রতিশ্রুতি পূরণ না করে মিথ্যাচার করছে বড় কোম্পানিগুলো

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার মালুমঘাট এলাকায় পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় একই পরিবারের পাঁচ নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন আরো তিনজন। মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ভোরে এ ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শাফায়েত হোসেন। তিনি বলেন, মঙ্গলবার ভোর পাঁচটার দিকে মৃত সুরেশ চন্দ্র শীলের সাত ছেলে ও দুই মেয়েসহ পরিবারের নয় সদস্য পারিবারিক পূজা দিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক পার হওয়ার সময় কক্সবাজারমুখী একটি দ্রুতগামী যানবাহন ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই নিহত হন পাঁচ ভাই। এতে পরিবারের আরও তিন সদস্য গুরুতর আহত হন। তাদের উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

পিকআপের ধাক্কায় একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যু

আমাদের পেজ লাইক করুন

error: Content is protected !!