ঠাকুরগাঁওয়ে ক্লিনিকে গর্ভবতী নারীকে মারধরের অভিযোগ

ঠাকুরগাঁওয়ে গাইনী চিকিৎসকের পরামর্শে পরিক্ষা না করায় এক গর্ভবতী নারী ও স্বজনদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (৭এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮ টার দিকে শহরের নিরাপদ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের গাইনী চিকিৎসক স্মৃতি হকের চেম্বারে এ ঘটনা ঘটে।

তবে চিকিৎসকের দাবি মারধরের বিষয়টি চেম্বার থেকে চলে যাওয়ার পর ঘটেছে বলে কিছুই করার নেই।
ভুক্তভোগী ও স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের গোপালপুর মুন্সিপাড়া গ্রামের আলমগীর হোসেনের স্ত্রী মৌসুমি আক্তার নিয়মিত গাইনী চিকিৎসক স্মৃতি হকের কাছে পরামর্শ নেন। গতকাল বিকেলে আবারো পরামর্শ নিতে গেলে ওই গাইনী চিকিৎসক তার মনোনীত ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আল্ট্রাসনোগ্রামসহ পরিক্ষা নিরীক্ষা করাতে বলেন। এসময় রোগী ও স্বজনরা অর্থ সাশ্রয় হওয়ায় অনত্র পরিক্ষা করিয়ে রিপোর্ট নিয়ে হাজির হন চিকিৎসকের কাছে। এতে ক্ষিপ্ত হন চিকিৎসক। তার মনমত ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কেন পরিক্ষা করা হয়নি সে কারনে রিপোর্ট না দেখে ফেলে দেন।

পুনরায় রিপোর্ট করাতে বলেন সেখানেই। এসময় রোগী ও স্বজনদের সাথে বাকবিতন্ড হলে চিকিৎসকের নিয়োজিত কর্মচারী আশিক গর্ভবতী ওই নারীকে থাপ্পড় মারেন। সাথে থাকা বৃদ্ধা মা ও ভসুর জাহাঙ্গীর এর প্রতিবাদ করতে গেলে নিরাপদ ক্লিনিক এর ক্যাশ ম্যানেজার রাসেল সহ বেশ কয়েকজন মিলে তাদেকেও মারধর করেন।

এ ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা ঘটনাস্থলের ভিডিও ধারণ করলে তাদের সাথেও খারাপ আচরণ করে নিউজ টুয়েন্টি ফোরের এর ক্যামরা ছিনতাই করে নিয়ে যান ক্যাশ ম্যানেজার রাসেল। এমন অভিযোগ করেন সংশ্লিস্ট ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি আব্দুল লতিফ লিটু। এবং সাংবাদিকদের দেখে নেয়ার হুমকিও দেন রাসেল। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান জেলার গণমাধ্যমকর্মীরা।

নিউজ টুয়েন্টিফোর ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিনিধি আব্দুল লতিফ লিটু অভিযোগ করে বলেন, আমি নামাজের জন্য মসজিদে যাওয়ার আগে আমার সহকর্মী রেদওয়ানুল হক মিলন সহ কয়েকজন সংবাদকর্মী ঘটনার ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে গেলে ক্যাশ ম্যানেজার রাসেলসহ বেশকয়েকজন তাদের লাঞ্চিত করে ক্যামরা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। আমি ছিনতাই হওয়া ক্যামরা উদ্ধার এর সুষ্ঠ বিচার দাবি করছি।

এবিষয়ে ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর হোসেন এর সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে রাত সাড়ে ১১টায় ক্যামরা ছিনতাই ও সাংবাদিকদের লাঞ্চিতের ঘটনায় সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

জেলার সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা জানান, একজন গর্ভবতী নারীকে ও তার স্বজনদের ক্লিনিকে মারধর ও সাংবাদিকদের লাঞ্ছনা ক্যামরা ছিনতাই এর ঘটনাটি খুব দুঃখজনক। ভাবতেও অবাগ লাগে একজন চিকিৎসকের চেম্বারে ঘটনা কিভাবে হয়। এর দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি হওয়া উচিৎ। একজন রোগী তার ইচ্ছেমতো যে কোন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে পরিক্ষা করানো দোষের কিছু নেই। ডাঃ স্মৃতি হক তার কথা মত নির্দিস্ট জায়গায় পরিক্ষা না করানোয় কমিশন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলেই তার লোকজনদের দিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। সেই সাথে চিকিৎসকের এমন হিন আচরন থেকে বেড়িয়ে সেবামুলক আচরণ করা উচিৎ বলে আমরা মনে করি।

সদর থানার ওসি তানভিরুল ইসলাম জানান, সাংবাদিক আব্দুল লতিফ ক্যামরা ছিনতাই ও সাংবাদিকদের লাঞ্চিতের বিষয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন। আর ভুক্তভুগীর পরিবার অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত রোগী ও স্বজনরা সদর থানায় মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। অভিযোগ করতে।

Please follow and like us:

     এই বিভাগের আরো খবর

আমাদের পেজ লাইক করুন

error: Content is protected !!