পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় সেনা সদস্য ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসে জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে ৬ জনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগ উঠেছে ওই সেনা সদস্যসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে।
গত শুক্রবার (০৬মে) সকালে জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের টোকরাভাষা আদরপাড়া এলাকায় পতিত পরে থাকা জমিতে হামলার ঘটনাটি ঘটে।
এ ঘটনায় ময়নুল ইসলামের পক্ষের ৬জন গুরুতর আহত হয়ে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন।
সড়েজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, মইনুল ও তার প্রতিবেশী আসলাম হোসেনের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল।
গত শুক্রবার ওই জমিতে আসলাম হোসেন আইল বাধতে শুরু করেন। বিষয়টি নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে দুই পক্ষের আলোচনার কথা থাকায় আসলামকে আইল বাধতে বাধা দেন মইনুল ইসলাম।
বাধা উপেক্ষা করে মইনুল ইসলামকে মারধর শুরু করেন আসলাম ও তার ছেলে সেনা সদস্য মাহবুব হোসেনসহ অন্যান্য আত্মীয়রা।
পরে মইনুল ইসলামকে রক্ষার জন্য তার স্ত্রী, বড় মেয়ে মৌসুমী আক্তার, দুই ভাতিজা এগিয়ে এলে তাদেরকেও দেশীয় অস্ত্রদিয়ে আঘাত করা হয়।
এসময় আহতদের চিৎকারে স্থানীয়রা সাহায্যার্থে এগিয়ে এলে আসলাম হোসেন ও তার ছেলে বর্তমান সেনা সদস্যসহ সকলে পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত মইনুল ও তার পরিবারের সদস্যদের দূত উদ্ধার করে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করান। বর্তমানে তারা চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
দেবীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন থাকা মইনুল ইসলাম জানান, আসলাম ও তার ছেলে সেনা সদস্য মাহাবুব আমাদের জমিতে আইল বাধতে গেলে আমরা বাধা দেই।
বাধা দেয়াতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের উপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এতে আমিসহ পরিবারের ৬ জন আহত হয়ে মাঠিতে লুটিয়ে পড়ি।
আমাদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে তারা পালিয়ে যায়। পরে আমাদেরকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে দেবীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা।
এব্যাপারে ৭ জনকে আসামী করে দেবীগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি। এদিকে সেনা সদস্য মাহবুব হোসেনের হাতে লাঠি নিয়ে প্রতিপক্ষের উপর হামলা করতে যাওয়ার একটি ভিডিও ক্লিপে পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে আসলাম ও তার ছেলে ছুটিতে আসা সেনা সদস্য মাহবুব হোসেনের সাথে কথা বলার জন্য একাধীক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা করেও তাকে পাওয়া যায় নাই। দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. এনায়েতুর রহমান বলেন, গত শুক্রবার সকালে ৬জন আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়। তাদের চিকিৎসা চলছে।
দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের এএসআই রিয়াজ বলেন, আমি খবর পেয়ে তদন্ত করে জানতে পারি আসলামের লোকজন তাদের মারপিট করেছে।
এদিকে দেবীগঞ্জ থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা এসআই রাশেদুল ইসলাম বলেন, আমরা জমি সংক্রাত মারপিটের ঘটনায় উভয় পক্ষেরই দুটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।