লেবাননের একজন সাংবাদিক একটি লাইভ টিভি সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলেন। বাসা থেকেই সাক্ষাৎকারটিতে যুক্ত ছিলেন তিনি। সাক্ষাৎকার চলার সময় হঠাৎ তার বাড়িতে একটি ইসরাইলি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি তার ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। এ সময় সংযোগটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং তিনি স্ক্রীনের বাইরে চলে যান।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) এ ঘটনা ঘটে। এই সাংবাদিকের নাম ফাদি বউদায়া। তিনি মিরায়া ইন্টারন্যাশনাল নেটওয়ার্কের এডিটর-ইন-চিফ।
সামাজিকমাধ্যমে এই ভিডিওটি এখন ভাইরাল। ভিডিওতে দেখা যায়, লাইভ সাক্ষাৎকার চলার সময় কথা বলছিলেন ফাদি। হঠাৎ তার বাড়িতে প্রচণ্ড শব্দে একটি বিস্ফোরণ হয়। সঙ্গে সঙ্গে ফাদি চিৎকার করে ওঠেন এবং টিভি স্ক্রীন ফাঁকা হয়ে যায়। সৌভাগ্যক্রমে এই ঘটনায় বেশি আঘাত পাননি ফাদি।
সাংবাদিক ফাদি লেবাননের হিজবুল্লাহর প্রতি সহানুভূতিশীল হিসেবে পরিচিত। ঘটনার পরে সামাজিকমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে তার অনুসারীদের আশ্বস্ত করেছেন। তিনি লেখেছেন, ‘যারা ফোন করেছেন, টেক্সট করেছেন, চেক ইন করেছেন এবং যারা আবেগ অনুভূতি নিয়ে স্মরণ করেছেন তাদের প্রত্যেককে ধন্যবাদ।’
আরও লিখেছেন, ‘সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ। আমি ভালো আছি। আল্লাহকে ধন্যবাদ এই জন্য যে, আমাদের প্রতি তাঁর আশীর্বাদ রয়েছে। আমরা আবার ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের সমর্থনে আমাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করব। আমার হৃদয়ের গভীর থেকে আপনাদের ধন্যবাদ।’
ইসরাইল-হিজবুল্লাহ উত্তেজনা বাড়ার মধ্যে ফাদি বউদায়ার ওপর এই হামলার ঘটনা ঘটল। গত অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে সীমান্তে উভয় পক্ষই তীব্র আন্তঃসীমান্ত সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ৭ অক্টোবরের পর থেকেই গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটছে ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে। সাম্প্রতিক সময়ে এই শত্রুতা অনেক বেশি বেড়েছে।
কয়েকদিন আগে হিজবুল্লাহ সদস্যদের ওপর সাইবার হামলার পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। ওই সময় তাদের যোগাযোগের ডিভাইস- হাজার হাজার পেজার এবং ওয়াকিটকি লক্ষ্য করে কয়েক দফা হামলা চালানো হয়। হিজবুল্লাহ এই হামলার পরিকল্পনার জন্য ইসরাইলকে দায়ী করেছে।
গত সোমবার, লেবাননে ইসরাইলি বিমান হামলায় ৫০ শিশুসহ ৫৫০ জনেরও বেশি নিহত হয়েছেন। সেইদিন সন্ধ্যায় ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেন। বার্তায় লেবাননের নাগরিকদের তাদের বাড়িঘর খালি করার আহ্বান জানানো হয়। অভিযান শেষ হলে তারা তাদের বাড়িতে ফিরে আসবেন বলে জানান তিনি।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বৈরুতে ইসরাইলি বিমান হামলায় হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র বিভাগের প্রধান ইব্রাহিম কুবাইসি নিহত হন। ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) কুবাইসির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছে, তিনি হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র অভিযানের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন। কুবাইসির পাশাপাশি অন্তত আরও ২ জন উচ্চপদস্থ কমান্ডার নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।