বাংলা ও বাঙালির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের এই স্বাধীন বাংলাদেশ। স্বাধীনভাবে মাথা উঁচু করে স্বাধীন দেশে আমরা বেঁচে আছি যাদের জন্য তাদের শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত স্মৃতিসৌধ। টানা ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতা।
বিজয়রে পর থেকেই দিবসটি শ্রদ্ধার সাথে পালন করে আসছে গোটা জাতি। এবার বিজয়রে ৫০তম বছরের সুবর্ণজয়ন্তী পালন করবে বাঙালি জাতি। শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য নেওয়া হয়েছে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা। বাংলার লাল সবুজের ইতিহাস ধারণ করে ৭টি স্মৃতি স্তম্ভ নিয়ে মাথা উঁচু করে ১০৮ একর জমির ওপর নির্মিত এই জাতীয় স্মৃতিসৌধ। এই স্মৃতিসৌধ বহন করে আমাদের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা।
৩০ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা ও বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে যে বিজয় পেয়েছি। সেই বিজয়রে উপাখ্যানই জাতীয় স্মৃতিসৌধ। এবারে বিজয় দিবসে ১৫ ডিসেম্বর শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। পরের দিন শ্রদ্ধা নিবেদন করবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী।
করোনা মহামারীর কারণে জাতীয় স্মৃতিসৌধ বন্ধ থাকায় এবার দুমাস আগে থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে স্মৃতিসৌধ কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে পুরো সৌধ এলাকা ধুয়ে মুছে রং-তুলির আঁচড় রাঙিয়ে তোলা হয়েছে। নানা রঙের বাহারি ফুলের চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে স্মৃতিসৌধের সবুজ চত্বর। চত্বরের সিঁড়ি ও নানা স্থাপনায় পড়েছে রং-তুলির আঁচড়। আলোকসজ্জায় সাজানো হয়েছে স্মৃতিসৌধের রাস্তাসহ পুরো এলাকা।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতে চারদিকে স্থাপন করা হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। বসানো হয়েছে পুলিশ কন্ট্রোল রুম ও নিরাপত্তা চৌকি। প্রতি মোড়ে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট।
করোনার কারণে এমনিতেই স্মৃতিসৌধে দর্শনার্থী প্রবেশে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ প্রস্তুতি সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন এবং পরিদর্শন করছেন জাতীয় স্মৃতিসৌধ। শরীফ আহমেদ জানান, মান্যবর অতিথিদের পদচারণে মুখর থাকবে জাতীয় স্মৃতিসৌধ অঙ্গন। যে কারণে স্মৃতিসৌধ এলাকার চারপাশ ঘিরে তৈরি করা হয়েছে চার স্তরের নিরাপত্তাবলয়। মূলত জাতীয় স্মৃতিসৌধের কর্মসূচি দিয়েই রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সফরের আনুষ্ঠানিকতার সূচনা হবে। তাই শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিয়ে বেশ ব্যস্ত দিন অতিক্রম করছেন পরিচ্ছন্নকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। সেনাবাহিনীর নয় পদাতিক ডিভিশনের তত্ত্বাবধানে জাতীয় স্মৃতিসৌধে থাকবে রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ, গাছের চারা রোপণ ও পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষরের আনুষ্ঠানিকতা।