স্ত্রী ও বিভিন্ন মেয়েদের নাম দিয়ে খোলে, পরে সে সব ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নিয়ন্ত্রণ করেন নাসিমার স্বামী টুটুল। এরপর ব্যক্তিদের টার্গেট করে নারী পরিচয়ে কথা বলা শুরু হয়। ফেলা হয় প্রেমের ফাঁদে। একপর্যায়ে ব্যক্তি ভিডিও কলে কথা বলতে চাইলে আবির্ভাব ঘটে স্ত্রীর। একান্তে সময় কাটাতে ডেকে আনা হয় বাসায়। এরপরই পাল্টে যায় দৃশ্যপট।
পুলিশ জানায়, পরে ভুক্তভোগীকে আটক করে চালানো হয় শারীরিক নির্যাতন। পুলিশ ও পরিবারকে জানিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হয় মোটা অঙ্কের টাকা।
রাজধানী থেকে এমন একটি চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতারের পর পুলিশ বলছে, তাদের টার্গেট ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি। এ চক্রের খপ্পরে পড়ে ৫ লাখ ২১ হাজার টাকায় মুক্তি মিলেছে এক ব্যক্তির।
ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তি জানান, তাকে আটকের পর ১০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। টাকা না দিলে গণমাধ্যম ও পুলিশ ডেকে ধরিয়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। ভয় দেখানো হয় সামাজিক হেনস্তার। পরে ৫ লাখ ২১ হাজার টাকায় মুক্তি মেলে তার।
স্বামী-স্ত্রী ছাড়াও চক্রটিতে রয়েছে সাত থেকে আটজন। যাদের রয়েছে আলাদা আলাদা দায়িত্ব। পারিবারিক ও সামাজিকভাবে হেনস্তার হাত থেকে বাঁচতে অনেকেই টাকার বিনিময়ে মুক্তি পেয়েছে তাদের কাছ থেকে।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন প্রতারকচক্রের মূলহোতা টুটুল। তিনি জানান, প্রথমে বন্ধু হতে আহ্বান জানানো হয়। সে আহ্বানে সাড়া দিলে শুরু হয় নারী সেজে এসএমএসে কথাবার্তা। কিছুদিন এভাবে চলার পর একপর্যায়ে দেওয়া হয় প্রেমের প্রস্তাব। এরপর ভিডিও কলে কথা বলতে প্রস্তাব দেওয়া হয় বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনে। সে সময় টুটুলের স্ত্রী নাসিমা ভিডিও কলে কথা বলেন।
এভাবে কিছুদিন চলার পর তাকে বাসায় ডাকা হয়। তখন নাসিমা ওই টার্গেট করা ব্যক্তিতে বাসায় নিয়ে আসেন।
নাসিমা জানান, বাসায় আসার পর দুজনে কথা বলতে থাকেন। তখন পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ওই ব্যক্তিকে মারধর করে তার পরিবারকে আসতে বলা হয়। সেটিতে রাজি না হলে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান জানান, বয়স্ক ব্যক্তিদের নিঃসঙ্গতাকে কাজে লাগিয়ে একদল লোক নিজেদের স্ত্রীদের ব্যবহার করে একান্তে সময় কাটানো ও অনৈতিক কাজে উৎসাহিত করার ফাঁদ পাতেন। এরপর নানরকম ভয় দেখিয়ে তাকে পারিবারিকভাবে চরম অস্বস্তিকর পরিস্থিতি ফেলে দেওয়া হয়। এরপর তার কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেন।
এই ধরনের ফাঁদ থেকে বাঁচতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপরিচিত কারো সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানো থেকে বিরত থাকার পরামর্শ পুলিশের।
সূত্রঃ সময় টিভি