বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারির চেয়ে পরিবেশ দূষণই মানুষের মৃত্যুর জন্য বেশি দায়ী বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সংস্থার ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। জানা গেছে, প্লাস্টিক ও ইলেকট্রনিক বর্জ্যসহ বিভিন্ন কারণে পরিবেশ দূষণে বিশ্বে প্রতি বছর ৯০ লাখ মানুষ মারা যায়। আর করোনা মহামারিতে গত এক বছরে প্রাণ হারিয়েছে ৫৯ লাখ মানুষ।
প্রতিবেদনটির লেখক ও জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক বিশেষ দূত ডেভিড বোয়েড বলেন,‘দূষণ ও পরিবেশের ক্ষতিকর উপাদানের ঝুঁকি মোকাবিলার বিষয়টি কার্যকর উপায়ে ব্যবস্থাপনার প্রচলিত প্রক্রিয়া সফল হয়নি। এর ফলে সমস্যাটির বিস্তর পরিসরে ছড়িয়ে পড়েছে, যা মানুষের পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যকর ও টেকসই পরিবেশ পাওয়ার অধিকার খর্ব করছে।’
পলিফ্লোরালকিল ও পারফ্লোরালকিল নিষিদ্ধের সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এসব উপাদান গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার হওয়ার সরঞ্জাম (বিশেষত নন-স্টিক তৈজসপত্র) তৈরিতে ব্যবহার হয়। এই রাসায়নিক উপাদান মানবদেহে ক্যানসারের অন্যতম কারণ। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যশেলেট পরিবেশ-সংক্রান্ত ঝুঁকিকে মানবাধিকারের প্রতি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশদূষণ-সংক্রান্ত ঘটনাগুলা দ্রুত বাড়ছে, যা মানবাধিকারের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কৃষি খাতে ব্যবহার হওয়া কীটনাশক, প্লাস্টিক ও ইলেকট্রনিক বর্জ্য মানুষের মৃত্যুর বড় কারণ। এসব কারণে প্রতিবছর প্রায় ৯০ লাখ মানুষের অকালমৃত্যু হয়। বিপরীতে ওয়ার্ল্ডোমিটারসের তথ্য মতে, গত দুই বছর ধরে চলা করোনা মহামারীতে প্রায় ৫৯ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে পাকিস্তান, বলিভিয়া ও ইথিওপিয়ার নদীগুলো বেশি দূষিত। এসব নদীতে সরাসরি ওষুধ ও অন্যান্য ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের বর্জ্য গিয়ে পড়ে।
বিবিসিকে গবেষণা দলের প্রধান ড. জন উইলকিনসন বলেন,‘সাধারণত ওষুধ হিসেবে এসব রাসায়নিকগুলো সেবন করি। সেগুলো আমাদের শরীরের উপর কিছু প্রভাব ফেলে এবং সেগুলো দেহ থেকে বেরিয়ে যায়। তবে, এখন নদী বা হ্রদের পানিতে মেশার আগে দূষিত পানির মধ্যে থাকা যৌগকে আধুনিক বর্জ্য পানি শোধনাগারগুলোও পুরোপুরি ধ্বংস করতে পারছে না।’