পরকীয়া প্রেমিকার ডাকে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে গোপনে মধ্যরাতে দেখা করতে গিয়ে প্রেমিকার স্বামী ও গ্রামবাসীর কাছে হাতেনাতে আটক হয় প্রেমিক খলিলুর রহমান (৪২) । পরের দিন মীমাংসার জন্য বসা শালিস বৈঠক থেকে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে অভিযুক্ত প্রেমিকের বিরুদ্ধে।
গত সোমবার রাতে এমন অভিযোগ করেন ওই গৃহবধূর স্বামী বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ৬নং ভানোর ইউনিয়নের দক্ষিণ বিশ্রামপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম।
রফিকুল ইসলাম বলেন সালিশ বৈঠকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান দুইজন ইউপি সদস্যসহ ২জন গ্রাম্য পুলিশ এবং স্থানীয় প্রায় দেড় দুইশ লোক উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় লোকজন মনে করছে, গ্রাম্য সালিশ অমান্য করে এভাবে অভিযুক্ত ব্যক্তির পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের অপমান জনক ঘটনা।
ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায় প্রেমিকা বিউটি আক্তার তার বাবার বাড়িতে চলে গেছে।
জানা যায়,অভিযুক্ত খলিলুর রহমান পার্শ্ববর্তী গ্রামের শাগখুয়া (পানুয়া মোহাম্মদের) ছেলে। স্থানীয়রা জানান খলিলুর রহমানের বাড়িতে তার স্ত্রী ও তিন সন্তান রয়েছে। আরো জানা যায় গত দু’বছর আগে খলিলুর রহমান তার বড় মেয়ের বিয়ের দিয়েছেন। অপরদিকে প্রেমিকা বিউটি আক্তার (৩৫) এর সংসারেও ৩টি সন্তান আছে।
এর আগে গত শনিবার গভীর রাতে এমন ঘটনায় এলাকার জনমনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে ওই এলাকায় গিয়ে জানা গেছে, প্রায় এক বছর ধরে খলিলুর রহমান ও বিউটি আক্তারের পরকিয়া প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছে। গত শনিবার রাত আনুমানিক ১১টার দিকে প্রেমিক খলিলুর রহমানকে ঘরে ডাকলে তার স্বামী টের পেয়ে তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে।
রফিকুল ইসলাম জানান, আটকের পর আমার স্ত্রী ও তার প্রক্রিয়া প্রেমিক খলিলুরকে সারারাত ২জন গ্রাম্য পুলিশের পাহারায় রাখা হয়। পরদিন রোববার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ২জন ইউপি সদস্য সহ ২জন গ্রাম্য পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে শালিস বৈঠকেও কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি। বৈঠক চলাকালে অভিযুক্ত খলিলুর রহমান বৈঠক থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায়। আমি এ ঘটনার ন্যায়বিচার পেতে ইউপি কার্যালয় ও বালিয়াডাঙ্গী থানায় লিখিত অভিযোগ এর প্রস্তুতি নিচ্ছি।
ওই গৃহবধূর শাশুড়ি সমিরন বিবি বলেন, একাধিকবার নিষেধ করেও ছেলের বউয়ের পরকীয়া সম্পর্ক থেকে বিরত হয়নি। এতে আমাকেই গালিগালাজ ও মারপিট করতো। এমন চরিত্রহীন পুত্রবধুকে তুলে চান না।
এদিকে প্রেমিক খলিলুরের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার স্ত্রী মাজেদা জানান, বৈঠক থেকে আসার পর থেকে তিনি বাড়িতে আসেননি, খলিলুর রহমানের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
মাজেদা আরো জানান, তার স্বামী খলিলুর রহমানকে জোরপূর্বক আটক করে মোটা অঙ্কের টাকা আদায়ের জন্য তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে এমন ফন্দি করেছে।
৬ নং ভানোর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম জানান, খলিলুর কে আটকের পর গ্রামবাসীর অনুরোধে আমি বিষয়টি মীমাংসার জন্য বসেছিলাম। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে চেষ্টা করে দু’পক্ষকে সিদ্ধান্তে আসতে না পারায় আমরা উঠে চলে আসি। আমরা উঠে আসার পর শুনেছি আটক খলিলুর সেখান থেকে পালিয়ে গেছে। এরপর ওই গৃহবধূর স্বামী রফিকুল ইসলামকে আইনের সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা মীমাংসা করে প্রায় সমাধান করে ফেলছিলাম কিন্তু পরবর্তীতে প্রেমিকা বলে যে সে তার প্রেমিককে বিয়ে করবে এবং তার স্বামীকে তালাক ও দিবেনা। আমি এলাকাবাসীর কাছে জানতে পারি যে ঐ মহিলার আগেও কয়েকজনের সাথে পরকীয়া প্রেমের বিষয়ে শালিস বৈঠক হয়েছে এবং তার স্বামী মেনেও নিয়েছে।
বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি খায়রুল আনাম জানান, এ ধরনের কোনো অভিযোগ নিয়ে কেউ থানায় আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।