গান গেয়ে গেয়ে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনার মূলহোতাসহ ০৩ জন আটক

গত ১৩ আগস্ট রাত আনুমানিক ১০:০০টা থেকে ১৪ আগস্ট ২০২৪ খ্রি. রাত ০১:৩০টার মধ্যবর্তী সময়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন ২ নং গেইটস্থ ট্রাফিক চত্বরে ছিনতাইকারী সন্দেহে গান গেয়ে গেয়ে হাত-পা বেঁধে এবং ট্রাফিক পোস্টের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক মারপিট করে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় ভিকটিম মোঃ শাহাদাত হোসেন (২৪)-কে। হত্যার পর অপকর্ম গোপন করার জন্য গত ১৪/০৮/২০২৪ খ্রি. (১৩ আগস্ট দিবাগত) রাতের অন্ধকারে মৃত শাহাদাতকে পাঁচলাইশ মডেল থানাধীন বদনাশাহ মাজারসংলগ্ন রাস্তার সামনে অজ্ঞাতনামা লোকজন ফেলে চলে যায়। পাঁচলাইশ মডেল থানা পুলিশ ওইদিন সন্ধ্যা ০৭:৩০ ঘটিকায় উক্ত লাশ উদ্ধার করে চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পাঁচলাইশ থানা পুলিশ মৃতের ময়নাতদন্ত সমাপ্ত করে তার পরিবারের নিকট লাশ হস্তান্তর করে এবং মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় এজাহারের প্রেক্ষিতে পাঁচলাইশ মডেল থানার মামলা নং- ১৩ তারিখ- ১৫/০৮/২০২৪ খ্রি.; ধারা- ৩০২/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়।

উক্ত বর্বরোচিত ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনার ভিডিয়ো ফুটেজ ২১ আগস্ট থেকে পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে প্রচারিত হলে তা ভাইরাল হয়ে পড়ে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠে। ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োর সূত্র ধরে গোপন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় উক্ত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় *”চট্টগ্রাম ছাত্র জনতা ট্রাফিক গ্রুপ”* নামে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ শনাক্ত করা হয়। সেই সূত্র ধরে গ্রুপটির অ্যাডমিন ও হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা ফরহাদ আহমেদ চৌধুরী প্র. জুয়েল (৪২)-কে শনাক্ত করা হয়। গোপন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় পাঁচলাইশ মডেল থানার একটি আভিযানিক টিম উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) জনাব মোহাম্মদ ফয়সাল আহম্মেদ (অতিরিক্ত ডিআইজি)-এর সার্বিক নির্দেশনায় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে পাঁচলাইশ থানার একটি আভিযানিক টিম গতকাল ২৪/০৯/২০২৪ খ্রি. বিকাল ০৫:০০ ঘটিকায় ২ নং গেইট সংলগ্ন বিপ্লব উদ্যান এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ফরহাদ আহমেদ চৌধুরী জুয়েল (৪২)-কে গ্রেফতার করে।

তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে উক্ত ‘‘চট্টগ্রাম ছাত্র জনতা ট্রাফিক গ্রুপ’’-এর সক্রিয় সদস্য এবং হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী এবং ভিডিয়ো ফুটেজে দৃশ্যমান মৃতপ্রায় শাহাদাতের গাল চেপে ধরে ব্যঙ্গাত্বকভাবে মন্তব্য করা *‘‘এ ভাইয়া সবাই একটা একটা সেলফি তুলে চলে যান ”* বলা আইনের সহিত সংঘাতে জড়িত মোঃ সালমান (১৬)-কে শনাক্ত করে সিএমপি চকবাজার থানাধীন শিল্পকলা একাডেমির সামনে থেকে একই দিন সন্ধ্যা আনুমানিক ৭:৩০ ঘটিকায় পুলিশ হেফাজতে গ্রহণ করা হয়।

ফরহাদ আহমেদ চৌধুরী জুয়েল ও মোঃ সালমান উভয়ের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এবং প্রাপ্ত তথ্য যাচাইবাছাই করে ‘চট্টগ্রাম ছাত্র জনতা ট্রাফিক গ্রুপের সক্রিয় সদস্য এবং উক্ত হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অপরাধে একই তারিখ রাত ০৯:০০ ঘটিকায় ২ নং গেইট সংলগ্ন মসজিদ গলি থেকে আনিসুর রহমান ইফাত (১৯)-কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার করে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডের যাবতীয় বিবরণসহ নিজেদের সক্রিয় থাকার কথা স্বীকার করে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।

Please follow and like us:

     এই বিভাগের আরো খবর

আমাদের পেজ লাইক করুন

error: Content is protected !!