টানা ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজার: সাত সপ্তাহে বাজার মূলধন বেড়েছে ৬১ হাজার কোটি টাকা

ঢাকা: দেশের শেয়ারবাজার দীর্ঘদিনের পতন কাটিয়ে প্রবল ঘুরে দাঁড়িয়েছে। টানা সাত সপ্তাহ ধরে উর্ধ্বমুখী ধারায় রয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। এ সময়ের মধ্যে শেয়ারবাজারের প্রধান সূচক ও বাজার মূলধন দুই-ই বড় উত্থান দেখিয়েছে। শুধু গত সপ্তাহেই ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২০ হাজার ৫০৯ কোটি টাকা, আর প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ২৫৯ পয়েন্টের বেশি

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসা, কিছু গুরুত্বপূর্ণ কোম্পানির ভালো আর্থিক প্রতিবেদন এবং মৌসুমী প্রভাব এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত রাখতে সাহায্য করেছে।

গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৮ হাজার ৭ কোটি টাকা, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৬ লাখ ৮৭ হাজার ৪৯৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ বাজার মূলধন এক সপ্তাহে বেড়েছে ২ দশমিক ৯৮ শতাংশ

প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স গত সপ্তাহে বেড়েছে ২৫৯.৫৬ পয়েন্ট বা ৫.০৬ শতাংশ। আগের ছয় সপ্তাহে এই সূচক বাড়ে ৪৯৪ পয়েন্ট। ফলে সাত সপ্তাহে ডিএসইএক্স সূচক বেড়েছে ৭৫৩ পয়েন্ট, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক ইঙ্গিত।

অন্যান্য সূচকের অবস্থান

  • ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক: গত সপ্তাহে বেড়েছে ৫২.৮৯ পয়েন্ট বা ৪.৭২ শতাংশ। সাত সপ্তাহে বেড়েছে মোট ১৬১.৩৩ পয়েন্ট

  • ডিএসই-৩০ সূচক: গত সপ্তাহে উত্থান ১৫৩.১১ পয়েন্ট বা ৭.৯১ শতাংশ। সাত সপ্তাহের মোট বৃদ্ধি ৩৬০.১৪ পয়েন্ট

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৮৫৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ২৬.০৯ শতাংশ বেশি। আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন ছিল ৬৮১ কোটি ৬২ লাখ টাকা।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ারে, যার গড় দৈনিক লেনদেন ছিল ২৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এরপর রয়েছে:

  1. বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন – ২৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা

  2. সিটি ব্যাংক – ২৩ কোটি ৯ লাখ টাকা

  3. ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো

  4. খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ

  5. স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস

  6. বেক্সিমকো ফার্মা

  7. ওরিয়ন ইনফিউশন

  8. সি পার্ল বিচ রিসোর্ট

  9. লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ

উল্লেখ্য, গত ঈদুল ফিতরের পর থেকে টানা আট সপ্তাহ ধরে দেশের শেয়ারবাজারে ব্যাপক দরপতন হয়, যার ফলে ২৬ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা বাজার মূলধন কমে যায় এবং ৫৮২ পয়েন্ট সূচকের পতন ঘটে। ঈদুল আজহার ছুটির আগে বাজার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে এবং এরপর থেকে টানা সাত সপ্তাহ ধরে ইতিবাচক প্রবণতা বজায় রয়েছে।

বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা দীর্ঘমেয়াদে অব্যাহত থাকবে। তবে বাজার বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলছেন, বাজারে স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে হলে কোম্পানির মৌলভিত্তি বিশ্লেষণ করে বিনিয়োগ করা উচিত এবং প্রয়োজনীয় বাজার নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণ আরও জোরদার করা দরকার।

Please follow and like us:

     এই বিভাগের আরো খবর

আমাদের পেজ লাইক করুন

error: Content is protected !!