মোহাম্মদ আসিফ, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
গাজীপুর মহানগরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও জবাই করে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে হত্যার ঘটনায় চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের মাঝে নেমে এসেছে শোক, ক্ষোভ ও প্রতিরোধের আগুন। প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বর।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) বিকেলে চট্টগ্রাম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (সিআরএ)-এর ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা বলেন, ‘‘এটি কেবল একজন সংবাদকর্মীকে হত্যা নয়, এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও সাংবাদিকতার ওপর সরাসরি আঘাত।’’
সভায় সভাপতিত্ব করেন সিআরএ সভাপতি সোহাগ আরেফিন। প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব ও দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার চট্টগ্রাম আবাসিক সম্পাদক জাহিদুল করিম কচি। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিআরএ’র সহ-আপ্যায়ন সম্পাদক সাফায়েত মোরশেদ।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সাংবাদিক মাইনুদ্দিন কাদেরী শওকত, কামরুজ্জামান রনি, এস এম পিন্টু, শিব্বির আহমেদ ওসমান, মো. মনির হোসেন, সহ-সভাপতি রাজু আহমেদ, সহকারী সম্পাদক আব্দুল কাদের রাজু, কোষাধ্যক্ষ সাইফুদ্দিন রমিজ, প্রচার সম্পাদক রোমেন চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রুবেল, এবং আরও অনেকে।
বক্তারা বলেন, “চাঁদাবাজি ও দেশীয় অস্ত্রের মহড়ার ভিডিও ধারণ—এই ছিল তুহিনের ‘অপরাধ’! তার সাহসী সাংবাদিকতা আজ তাকে জীবন দিতে বাধ্য করেছে। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করে—আমরা এক ভয়াবহ আইনশৃঙ্খলা বিপর্যয়ের মধ্যে বাস করছি।”
তারা আরও বলেন, “২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর নবগঠিত রাষ্ট্রব্যবস্থায় দিনের আলোয় সাংবাদিক খুন হওয়ার অর্থ হলো—সন্ত্রাসীরা আগের মতোই বেপরোয়া। যদি এখনই তাদের দমন করা না হয়, তবে শুধু সাংবাদিক নয়, সাধারণ মানুষের কণ্ঠও চিরতরে রুদ্ধ হয়ে যাবে।”
বক্তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে তুহিন হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান। তারা বলেন—
“এটি শুধু একজন তুহিনের জন্য লড়াই নয়; এটি সত্য, ন্যায় ও স্বাধীন সাংবাদিকতার অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই।”
সমাবেশ শেষে ‘তুহিন হত্যার বিচার চাই’ স্লোগান দিতে দিতে প্রেসক্লাব চত্বর প্রদক্ষিণ করেন উপস্থিত সাংবাদিকরা। চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে প্রতিবাদের ধ্বনি, প্রতিধ্বনিত হয় ‘সাংবাদিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ’-এর অঙ্গীকার।