কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার মালুমঘাট এলাকায় পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় একই পরিবারের পাঁচ নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন আরো তিনজন। মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ভোরে এ ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শাফায়েত হোসেন। তিনি বলেন, মঙ্গলবার ভোর পাঁচটার দিকে মৃত সুরেশ চন্দ্র শীলের সাত ছেলে ও দুই মেয়েসহ পরিবারের নয় সদস্য পারিবারিক পূজা দিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক পার হওয়ার সময় কক্সবাজারমুখী একটি দ্রুতগামী যানবাহন ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই নিহত হন পাঁচ ভাই। এতে পরিবারের আরও তিন সদস্য গুরুতর আহত হন। তাদের উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

পিকআপের ধাক্কায় একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যু

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার মুরুং বাজার এলাকায় বেইলি ব্রিজ ভেঙে চালভর্তি ট্রাক খাদে পড়ে আব্দুল গফুর (৫০) নামে একজন নিহত হয়েছে। ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় বান্দরবানের সঙ্গে রুমার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

আজ বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে রোয়াংছড়ি উপজেলার মুরুং বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ট্রাক ড্রাইভার সাতকানিয়ার পুরানগড় এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বুধবার দুপুরে বান্দরবান থেকে চালভর্তি একটি ট্রাক রুমায় যাওয়ার সময় রোয়াংছড়ি উপজেলার মুরুং বাজার এলাকায় পৌঁছালে বেইলি ব্রিজ ভেঙে ট্রাকটি ঝিরিতে পড়ে যায়। এ সময় ট্রাকচালক আব্দুল গফুর ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এ ঘটনায় বান্দরবানের সঙ্গে রুমার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে দু’পাড়ের অসংখ্য যাত্রী।

রোয়াংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান জানান, রুমায় যাওয়ার সময় রোয়াংছড়ি ইউনিয়নের মুরুং বাজার এলাকায় একটি ট্রাক বেইলি ব্রিজ ভেঙে নিচে পড়ে যায়। এ ঘটনায় ট্রাক ড্রাইভার মারা গেছে। নিহতকে উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।

বান্দরবানে বেইলি ব্রিজ ভেঙে ট্রাক খাদে, নিহত ১

দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে প্রাইভেট কারের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ঘটনাস্থলে প্রাইভেট কারের তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন।

আজ বুধবার সকাল পৌনে ৭টার দিকে উপজেলার ঘোড়াঘাট রেলঘুণ্টি নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিরামপুর থানার ওসি সুমন কুমার মহন্ত।

নিহতদের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে বাকি দুজনের নাম পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। পার্বতীপুর মধ্যপাড়া এলাকার বাসিন্দা হালিম সাহার ছেলে হাফিজুর রহমান শাহ (৪০) ৷ প্রাইভেটকারের চালকসহ চারজন পার্বতীপুর থেকে জয়পুরহাটে যাচ্ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল পৌনে ৭টার দিকে উপজেলার ঘোড়াঘাট রেলঘুণ্টি এলাকায় রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় ঢাকা থেকে কুড়িগ্রাম গামী দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনটি ওই প্রাইভেটকারে ধাক্কা দিয়ে ৫০ গজ দূরে টেনে নিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়। তবে প্রাইভেটকারচালক দুর্ঘটনার আগে নেমে পালিয়ে যান।

নিহতদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য তিন লাশ এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বিরামপুরে ট্রেনের ধাক্কায় প্রাইভেট কারের ৩ যাত্রী নিহত

করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কারণে, ৮৫ দিন গণপরিবহন বন্ধ থাকার পরেও, (২০২১) গত এক বছরে, ৫ হাজার ৬২৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে ৭ হাজার ৮০৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৯ হাজার ৩৯ জন।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী । ছবিঃ সংগৃহীত

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী । ছবিঃ সংগৃহীত

এর আগের বছর ৪ হাজার ৮৯১টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৬ হাজার ৬৮৬ জন। আর আহত হয়েছেন ৮ হাজার ৬০০ জন।

রোববার (২৩ জানুয়ারি) আজ সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ তথ্য তুলে ধরেন। এসময় তিনি বার্ষিক সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন-২০২১ প্রকাশ করেন।

প্রতিবেদেনে দেখা গেছে, এসব দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন ২ হাজার ৩৫০ জন চালক, ১ হাজার ৭১৫ জন পথচারী, ১ হাজার ১৭ জন পরিবহনশ্রমিক, ৪৩০ জন ছাত্রছাত্রী, ১১১ জন শিক্ষক, ২৩৭ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ১ হাজার ৭৬ জন নারী, ৬৩৮ জন শিশু, ৪২ জন সাংবাদিক, ২৭ জন চিকিৎসক, ১৪ জন আইনজীবী ও ১৮ জন প্রকৌশলী এবং ১৬১ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও ১০ জন মুক্তিযোদ্ধা।

উল্লেখিত সড়ক দুর্ঘটনায় সর্বমোট ৭ হাজার ৭৩০টি যানবাহনের পরিচয় গণমাধ্যমে পাওয়া গেছে, যার ৩০ দশমিক ৪২ শতাংশ ট্রাক, পিকআপ, লরি ও কাভার্ড ভ্যান; ২৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ বাস, ৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা ৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৮ দশমিক ৬৮ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা, রিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইক, ৬ দশমিক ১৭ শতাংশ কার-মাইক্রোবাস।

সংগটিত মোট দুর্ঘটনার ৫৪ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ পথচারীকে গাড়িচাপা দেওয়ার ঘটনা, ২২ দশমিক ১৭ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৬ দশমিক ১৩ শতাংশ খাদে পড়ে, ৬ দশমিক ২১ শতাংশ বিবিধ কারণে, শূন্য দশমিক ৫৩ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁছিয়ে এবং শূন্য দশমিক ৮৭ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

এদিকে, ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় সংঘটিত যানবাহনের শূন্য দশমিক ৭৯ শতাংশ মোটরসাইকেলে, শূন্য দশমিক ৭৬ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাসে শূন্য দশমিক ২১ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেলেও করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতিতে ৮৫ দিন গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ২ দশমিক ৬৩ শতাংশ বাস দুর্ঘটনা, ১ শতাংশ নসিমন-মাহিন্দ্র-লেগুনা দুর্ঘটনা, শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক দুর্ঘটনা কমেছে।

এ সময় বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণাকেন্দ্রের পরিচালক ড. হাদিউজ্জামান বলেন, দুর্ঘটনা একটা জাতীয় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এত আইন আছে, সুপারিশ আছে, কিন্তু তার কোনো কিছুই বাস্তবায়ন নেই।

মানবাধিকারকর্মী নুর খাল লিটন বলেন, গণপরিবহনে নারী যাত্রীদের যেভাবে হেনস্তা করা হয়, তা বলার মতো নয়। দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় দেখা যায়, চালকদের কোনো বিশ্রাম দেওয়া হয় না। সারা দিন গাড়ি চালাচ্ছে, ফলে দুর্ঘটনা ঘটছে। তা ছাড়া মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। কিন্তু তার কোনো নিতিমালা নেই। সবকিছুর মূলে রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকতে হবে।

সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ ঝরেছে ৭,৮০৯

আমাদের পেজ লাইক করুন

error: Content is protected !!