কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার ইউসুফপুরে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে দুই প্রার্থীর সমর্থদের মধ্যে সংঘর্ষের, নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর এক সমর্থকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এ ছাড়া অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।

গতকাল মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ইউনিয়নের ইউসুফপুর ধানিস মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী কবির হোসেন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মাজহারুল হক মামুনের সমর্থকদের মধ্যে মারামারির সময় নিচে পড়ে গিয়ে সুরুজ মিয়া নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন বলে জানতে পেরেছি। মৃত সুরুজ মিয়া (৫০) ইউসুফপুর এলাকার বাসিন্দা। তবে ওই বৃদ্ধের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি।

স্থানীয়রা জানায়, নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ইউছুফপুর গ্রামে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী কবির হোসেন ও ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী মাজহারুল হক মামুনের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় লোকজনের ধাক্কায় মাটিতে পড়ে গিয়ে সুরুজ মিয়া (৫০) নামের ওই বৃদ্ধ আহত হন। পরে রাত ১১টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোঘণা করেন।

নৌকার প্রার্থী কবির হোসেনের অভিযোগ, স্বতন্ত্র প্রার্থী মাজহারুল হক মামুন তার লোকজন নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। হামলায় তিনি নিজে, সমর্থক খাইরুল ইসলাম ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সুমন রানাসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। মামুনের লোকজনের হামলায় মাটিতে লুটে পড়ে সুরুজ মিয়া মারা গেছেন। তিনি এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাজহারুল হক মামুন জানান, এ হামলার সঙ্গে তিনি বা তার কোনো সমর্থক জড়িত নয়। প্রতিপক্ষ নিজেরাই এ ঘটনা সৃষ্টি করেছে। এখন তাদের ওপর দায় চাপিয়ে নির্বাচনে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে।

দেবীদ্বারে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে ১ জনের মৃত্যু

দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে প্রাইভেট কারের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ঘটনাস্থলে প্রাইভেট কারের তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন।

আজ বুধবার সকাল পৌনে ৭টার দিকে উপজেলার ঘোড়াঘাট রেলঘুণ্টি নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিরামপুর থানার ওসি সুমন কুমার মহন্ত।

নিহতদের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে বাকি দুজনের নাম পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। পার্বতীপুর মধ্যপাড়া এলাকার বাসিন্দা হালিম সাহার ছেলে হাফিজুর রহমান শাহ (৪০) ৷ প্রাইভেটকারের চালকসহ চারজন পার্বতীপুর থেকে জয়পুরহাটে যাচ্ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল পৌনে ৭টার দিকে উপজেলার ঘোড়াঘাট রেলঘুণ্টি এলাকায় রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় ঢাকা থেকে কুড়িগ্রাম গামী দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনটি ওই প্রাইভেটকারে ধাক্কা দিয়ে ৫০ গজ দূরে টেনে নিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়। তবে প্রাইভেটকারচালক দুর্ঘটনার আগে নেমে পালিয়ে যান।

নিহতদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য তিন লাশ এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বিরামপুরে ট্রেনের ধাক্কায় প্রাইভেট কারের ৩ যাত্রী নিহত

সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যাকাণ্ডে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেছেন আদালত। আজ সোমবার (৩১ জানুয়ারি) কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল এ রায় ঘোষণা করেন।

বরখাস্তকৃত এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাগর দেব ও রুবেল শর্মাসহ ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া অন্যরা হলেন নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন। এই ৩ জনই টেকনাফ থানায় পুলিশের দায়ের করা মামলার সাক্ষী ছিলেন; তারা টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা।

সেই সাথে এপিবিএন এর এসআই মো. শাহজাহান, এএসআই লিটন মিয়া এবং কনস্টেবল যথাক্রমে রাজিব, আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও মো. আবদুল্লাহকে খালাস দেয়া হয়েছে। পুলিশের এই সাত সদস্যকেও সিনহা হত্যার ঘটনার পর বরাখাস্ত করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, পুলিশ থেকে বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ সবশেষ টেকনাফ থানায় দায়িত্ব পালন করেন। অন্যদিকে বরখাস্ত হওয়ার আগে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন পরিদর্শক ছিলেন লিয়াকত আলী। আর এই কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক ছিলেন নন্দদুলাল রক্ষিত। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত রুবেল শর্মা ওসি প্রদীপের দেহরক্ষী ছিলেন।

এর আগে মামলার বিবরণীতে আদালত মন্তব্য করেন, লিয়াকত ও নন্দদুলালের সক্রিয় ভূমিকা প্রমাণিত হয়েছে। সেই সাথে গুলি করার পর মাটিতে লুটিয়ে পড়া সিনহাকে লাথি মারার অভিযোগও প্রমাণিত হয়েছে ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে। এছাড়া এই হত্যাকাণ্ড সম্পূর্ণভাবে পূর্ব পরিকল্পিত বলেও মন্তব্য করা হয়েছে।

এর আগে সোমবার (৩১ জানুয়ারি) দুুপুর ২টার দিকে চাঞ্চল্যকর মেজর (অব.) সিনহা হত্যা মামলার রায় ঘোষণা সংক্রান্ত কার্যক্রম শুরু হয়। ৩০০ পৃষ্ঠার রায় পড়ে শুনানো হয়।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাত সাড়ে নয়টায় কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের তৎকালীন কর্মকর্তা পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন সিনহা মো. রাশেদ খান। তার সাথে থাকা সাহেদুল ইসলামকে (সিফাত) পুলিশ গ্রেফতার করে। সিনহা কক্সবাজারে যে রিসোর্টে ছিলেন, সেই নীলিমা রিসোর্ট থেকে তার তথ্যচিত্র নির্মাণ সহযোগী শিপ্রা দেবনাথ ও তাহসিন রিফাত নুরকে আটক করা হয়। পরে তাহসিনকে ছেড়ে দিলেও শিপ্রা ও সিফাতকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। এ ঘটনায় দেশজুড়ে চাঞ্চল্য দেখা দেয়। শিপ্রা ও সিফাত জামিনে মুক্তি পান।

সিনহা হত্যার ঘটনায় সে সময় চারটি মামলা হয়। ঘটনার পরপরই পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করে। এর মধ্যে দুটি মামলা হয় টেকনাফ থানায়, একটি রামু থানায়। তিনটি মামলার দুটি মাদক রাখার অভিযোগে এবং একটি পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে।

অপরদিকে, হত্যা মামলা দায়ের করেন সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। ওই বছরের ৫ আগস্ট আদালতে করা ওই মামলায় তিনি টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ পুলিশের নয় সদস্যকে আসামি করেন। সবগুলো মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় র‌্যাব। প্রদীপ কুমার দাশ, লিয়াকত আলীসহ ১৪ জনকে গ্রেফতার করে তারা। এদের মধ্যে ১১ জন পুলিশ আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য ও ৩ জন গ্রামবাসী। পুলিশের করা তিনটি মামলার অভিযোগের কোনো সত্যতা না পাওয়ায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. খাইরুল ইসলাম।

আর হত্যা মামলায় গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে আসামি করে কক্সবাজার আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় র‍্যাব। আসামিদের মধ্যে ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন । তবে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি।

গত বছরের ২৭ জুন প্রদীপসহ ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এই মামলার বিচার শুরু হয়। অভিযোগপত্রে থাকা ৮৩ সাক্ষীর মধ্যে ৬৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। গত ১২ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আদালত রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। আর আজ ঘোষণা হলো চাঞ্চল্যকর মামলাটির রায়।

সিনহা হত্যার রায়: ওসি প্রদীপ ও পরিদর্শক লিয়াকতের ফাঁসির আদেশ

সম্প্রতি ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রাহকদের জন্য আরও নজরদারি বাড়াতে নিয়ে এসেছে একাধিক নতুন ফিচার। বিশেষ করে মেসেঞ্জারের জন্য তারা চালু করেছে চ্যাট ও কলের নিরাপত্তায় এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন।

এই এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন হচ্ছে- যে দু’জনের মধ্যে কথোপকথন হয়েছে, তারা বাধে সেই তথ্য অন্য কেউ দেখতে পাবেন না। আর এবার থেকে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপ্ট করা মেসেঞ্জার চ্যাটে ডিজাপিয়ারিং মেসেজের কেউ স্ক্রিনশট নিলে নোটিফিকেশন পাবেন গ্রাহক। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সিকিউরিটি ফিচার, যা এতদিন ধরে চালু ছিল শুধু কিছু সীমিত সংখ্যক ব্যবহারকারীর জন্য। এবার সব ব্যবহারকারী এ সুবিধার আওতায় আসবে।

এর পাশাপাশি মেসেজ রিয়াকশন ফিচারও রিলিজ করা হচ্ছে। মেসেঞ্জারের এই অপশনটির সাহায্যে ইমোজিসহ মেসেজের প্রতিক্রিয়া জানানো যাবে।

ফেসবুকের নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জুকেরবার্গও জানিয়েছিলেন, ব্যক্তিগত চ্যাটের পাশাপাশি মেসেঞ্জারে গ্রুপ চ্যাট, গ্রুপ অডিও বা ভিডিও কলের ক্ষেত্রেও এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন কার্যকর হবে। মূলত গ্রাহকদের গোপনীয়তা নিশ্চিত করতেই নতুন ফিচার আনা হল।

ফেসবুক মেসেঞ্জারে নতুন সুবিধা চালু

বহুল আলোচিত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আগামীকাল সোমবার (৩১ জানুয়ারি)। কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে এ রায় ঘোষণা করা হবে। দীর্ঘ শুনানি, সাক্ষীদের জবানবন্দি, জেরা ও আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শেষে গত ১২ জানুয়ারি রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেছিলেন বিচারক। এদিকে টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ তার ব্যক্তিগত বাহিনীর (১৫ আসামি) সবাইকে ফাঁসির আদেশ দেয়ার দাবি জানিয়ে টেকনাফ থেকে কয়েকশ মানুষ আসবে। স্বজনহারা ব্যক্তিরা জানান, টেকনাফে ওসি থাকাকালীন প্রদীপ কুমার দাশ ও তার বাহিনীর ক্যাডাররা ২০৪ জনকে মাদককারবারি আখ্যা দিয়ে বিচার বহির্ভূতভাবে হত্যা করেছে। তাদের আত্মীয়রা কয়েকটি গাড়ি রিজার্ভ করে মিছিল সহকারে আদালতে প্রদীপ দাশসহ সবার ফাঁসির দাবি জানাতে ভিড় করবে বলে জানা গেছে। জেলা পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন ও নিরবচ্ছিন্ন নিরাপত্তা বলয় তৈরি করতে জেলা পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে। পাশাপাশি র‌্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করবে। জেলা কারাগার থেকে একাধিক গাড়ির বহর কঠোর নিরাপত্তা দিয়ে সিনহা হত্যা মামলার আসামিদের আদালতে হাজির করা হবে।

আলোচিত সিনহা হত্যার রায় কাল, ফাঁসি চান স্বজনরা

আমাদের পেজ লাইক করুন

error: Content is protected !!