রাশিয়া দাবি করেছে, টানা কয়েক সপ্তাহ ধরে অবরুদ্ধ থাকা বন্দর শহর মারিওপোলে ইউক্রেনের এক হাজারেরও বেশি সেনা আত্মসমর্পণ করেছে। রাশিয়ার এই দাবির বিষয়টি মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত নিশ্চিত করেনি ইউক্রেন। তবে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও খাবার ফুরিয়ে আসায় সেখানকার ইউক্রেনীয় সেনারা যে চাপে আছে তা নানাসূত্রেই জানা যাচ্ছিল। শহরের কিছু স্থানে রুশ সেনাদের রাস্তায় টহল দেওয়া ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বার্তা বলার ছবি প্রকাশিত হয়েছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বুধবার বলেছে, ‘মারিওপোল শহরে ইউক্রেনের ৩৬তম মেরিন ব্রিগেডের এক হাজার ২৬ জন সেনা স্বেচ্ছায় তাদের অস্ত্র তুলে দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছে। সেনারা শহরের বড় ইস্পাত কারখানা ‘মারিওপোল মেটালার্জিক্যাল প্ল্যান্ট’-এর কাছে আত্মসমর্পণ করে। সেনাদের মধ্যে ১৬২ জন কর্মকর্তা ও ৪৭ জন নারী রয়েছেন। তাঁদের অনেকেই আহত অবস্থায় ছিলেন। ’
রাশিয়ার দাবি সত্যি হলে, ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর আক্রমণ শুরু হওয়ার পর এই প্রথম তাদের হাতে একটি বড় শহরের পতন হতে যাচ্ছে।
এদিকে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, আত্মসমর্পণের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। মারিওপোলে রুশপন্থী বাহিনীগুলোর সঙ্গে থাকা রয়টার্সের সাংবাদিকরা মঙ্গলবার শহরের আজোভস্তাইল এলাকা থেকে আগুনের শিখা উঠতে দেখেছিলেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমর্থক চেচেন নেতা রমজান কাদিরভ আজোভস্তাইলে ঘাঁটি গেড়ে থাকা ইউক্রেনের অন্য সেনাদেরও আত্মসমর্পণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
রাশিয়ার টেলিভিশনে প্রদর্শিত ছবিতে দেখা গেছে, কথিত ইউক্রেনের মেরিন সেনারা আত্মসমর্পণ করছে। তাদের অনেকে দৃশ্যত আহত। ওই সেনাদের দুই হাত ওপরে তুলে মারিওপোলের একটি রাস্তা ধরে মার্চ করে যেতে দেখা যায়।
রাশিয়া তার অধিকৃত ক্রিমিয়ার সঙ্গে দনবাসের মস্কো সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী অঞ্চল দোনেত্স্ক ও লুহানস্ককে সংযুক্ত করার চেষ্টা করছে বলে মনে করা হচ্ছে। সে লক্ষ্যে সামরিক অভিযানের শুরুতেই মারিওপোল অবরোধ করে রুশ সেনারা। প্রচণ্ড গোলা ও বোমা হামলায় শহরটির ৯০ ভাগ স্থাপনা ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানানো হয়েছিল। মেয়র বলেছেন, শহরটিতে রুশ হামলায় ২১ হাজার বেসামরিক লোক মারা গেছে। সূত্র: এএফপি, বিবিসি